চুরির অপবাদ দিয়ে এক নাবালককে উল্টো করে ঝুলিয়ে বিদ্যুতের শক দেওয়ার অভিযোগে অবশেষে গ্রেফতার (Arrested) করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত শাহেনশাহকে। সন্তোষপুরের ওই নির্মম ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মুম্বই থেকে গ্রেফতার (Arrested) করা হয়েছে তাঁকে। যদিও মুম্বইয়ের ঠিক কোন জায়গা থেকে তাঁকে ধরা হয়েছে, তা এখনও জানায়নি পুলিশ।
শাহেনশাহর সঙ্গে আরও দু’জনকে গ্রেফতার (Arrested) করা হয়েছে। এর আগে দুজনকে ধরা হয়েছিল। ফলে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় চলতি সপ্তাহের শুরুতে একটি ভাইরাল ভিডিও ঘিরে। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কারখানার ভেতরে এক নাবালককে উল্টো ঝুলিয়ে বিদ্যুতের শক দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। শিশু সুরক্ষা কমিশনও দ্রুত তৎপর হয়ে ওঠে। যদিও ভিডিওটির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি, তবে পুলিশের তদন্তে এই নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানা যাচ্ছে।
নির্যাতনের শিকার ওই নাবালক উত্তরবঙ্গের ইসলামপুরের বাসিন্দা। তাঁর পরিবার আর্থিক কষ্টে দিন কাটায়। শাহেনশাহ তাঁদের ৮-১০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের লোভ দেখিয়ে ওই কিশোরকে কলকাতায় নিয়ে আসে। সন্তোষপুরের তাঁর জিন্স রং করার কারখানাতেই ওই নাবালক ও তার দাদা কাজ করত।
ঘটনার দিন, শুধু ওই নাবালক নয়, তার দাদাকেও মারধর করা হয়। তবে দাদাকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই দাদাই পরবর্তীতে গোটা ঘটনাটি প্রকাশ্যে আনেন এবং থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ আগেই এই ঘটনায় মোস্তাফা কামাল ও তৌহিদ আলম নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল। তারা কারখানার কর্মী এবং ঘটনার সময় উপস্থিত ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতদের বক্তব্যে নানা অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। একজন বলছে, মারধরের পর নাবালক পালিয়ে গিয়েছে। অপরজন বলছে, তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না কেউ।
এই অবস্থায়, মূল অভিযুক্ত শাহেনশাহর গ্রেফতারিকে বড় সাফল্য বলে মনে করছে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে এখন নাবালকের প্রকৃত অবস্থান জানার চেষ্টা চলছে। নিখোঁজ কিশোরের পরিবার ও এলাকাবাসী এখন একমাত্র আশা করে বসে আছে, শাহেনশাহর মুখ থেকেই মিলবে কিশোরের হদিস।