ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ পঞ্চম দিনে পৌঁছেছে, আর এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি শুধু যুদ্ধবিরতির পক্ষে নন — তিনি চান “পুরোপুরি যুদ্ধের অবসান”।
এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প (Donald Trump) বলেন, “আমরা যুদ্ধবিরতির চেয়েও ভালো কিছু চাই।” এরপর তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, আমরা চাই এই যুদ্ধের পুরোপুরি একটা শেষ হোক।” এই মন্তব্যগুলি এমন সময় এল, যখন ইসরায়েল ও ইরানের সংঘর্ষে শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন এবং বিশ্বজুড়ে তেল বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (Donald Trump) বলেন, “ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না। আমরা সেটা হতে দেব না।” এছাড়াও তিনি জানান, আমেরিকার সিনিয়র কর্মকর্তারা—যেমন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বা মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ—দূতিয়ালি আলোচনার জন্য ইরানে পাঠানো হতে পারে। ট্রাম্প বলেন, “আগামী দুই দিনের মধ্যে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। কেউ থেমে নেই।” এই মন্তব্য ইঙ্গিত করে যে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এখনও জোর কদমে চলছে।
তিনি জি৭ সামিট থেকে তাড়াহুড়ো করে ওয়াশিংটনে ফিরে আসলেও, ট্রাম্প (Donald Trump) দাবি করেন এটি যুদ্ধবিরতির আলোচনার কারণে নয়। বরং তিনি তার Truth Social-এ লিখেছেন, “ম্যাক্রোঁ যা বলেছেন তা ভুল। আমার ফিরে আসার কারণ যুদ্ধবিরতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ব্যাপারটা আরও অনেক বড়।” Politico-র এক রিপোর্টে ট্রাম্পকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, “ইরানকে তাদের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি পুরোপুরি ছাড়তে হবে।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “সরাসরি বলছি — ইরান পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না। আমি বারবার বলেছি! সবাই এখনই তেহরান ছেড়ে বেরিয়ে যান!”

অন্যদিকে, ইরান আবারো ইসরায়েলি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তেহরান ও নাতাঞ্জ-এর আকাশে বিস্ফোরণ ও আকাশ প্রতিরক্ষা কার্যকলাপ দেখা গেছে। কাশানে ইসরায়েলি হামলায় ৩ জন নিহত, ৪ জন আহত হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা ইরানের যুদ্ধকালীন চিফ অফ স্টাফকে হত্যা করেছে, এবং বড় অস্ত্রাগার ও ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। এখন পর্যন্ত ইরানে মৃত্যু ২২৪ জন, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ, এবং ইসরায়েলে ২৪ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে, ইরান ওমান, কাতার ও সৌদি আরবের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে যেন তারা ওয়াশিংটনের উপর চাপ সৃষ্টি করে ইসরায়েলকে যুদ্ধ থামাতে বাধ্য করে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ লিখেছেন, “যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সত্যিই কূটনীতি চান, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। ইসরায়েলকে তাদের আগ্রাসন থামাতেই হবে। না হলে আমরা পাল্টা আঘাত চালিয়ে যাব।” এদিকে, চীন তাদের নাগরিকদের ইসরায়েল ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, কারণ দেশটির আকাশসীমা বন্ধ এবং পরিস্থিতি ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।