যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ভারতের আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা (Ahmedabad Plane Crash) নিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, এই দুঃখজনক ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এটি একটি ভয়ানক দুর্ঘটনা ছিল। আমরা যা কিছু করতে পারি, তা করব।”
Air India-এর 787-8 Dreamliner বিমানটি বৃহস্পতিবার দুপুরে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ভেঙে পড়ে (Ahmedabad Plane Crash)। বিমানে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। বিমানটি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। এই দুর্ঘটনাকে ট্রাম্প ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা বলে আখ্যা দেন।
তিনি বলেন (Ahmedabad Plane Crash), “বিমান দুর্ঘটনাটি ছিল মর্মান্তিক। আমি ভারতের কর্মকর্তাদের বলেছি, যেকোনো ধরনের সাহায্য লাগলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুত আছি। ভারত একটি শক্তিশালী দেশ, তারা নিশ্চয়ই পরিস্থিতি সামলাতে পারবে, কিন্তু আমি তাদের জানিয়ে দিয়েছি, আমেরিকা পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “দুর্ঘটনাটি (Ahmedabad Plane Crash) ভয়াবহ। মনে হচ্ছে অধিকাংশ যাত্রী আর নেই। আমরা শুনছি হয়তো একজন-দুজন বেঁচে থাকতে পারেন। আসলে কেউ জানে না কীভাবে এমনটা ঘটল। আমি কয়েকটি বিষয় পরামর্শ দিয়েছি, যেমন ‘তোমরা এটা খতিয়ে দেখতে পারো’। সিসিটিভি ফুটেজে বিমানটি ভালোই উড়ছিল, কোনো বিস্ফোরণ দেখায়নি, শুধু মনে হচ্ছিল ইঞ্জিনের শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। কিন্তু এটি ভয়ানক একটি দুর্ঘটনা – সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ বিমান দুর্ঘটনা।”

এই দুর্ঘটনার পর মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা বোয়িং-এর ওপর চাপ আরও বেড়েছে। সংস্থাটি গত কয়েক বছর ধরেই নিরাপত্তা এবং উৎপাদন নিয়ে নানা জটিলতার সম্মুখীন। নতুন CEO দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি আবার গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছিল, কিন্তু এ দিনের 787-8 Dreamliner ভেঙে পড়ার ঘটনা সেই প্রচেষ্টায় বড় ধাক্কা দিয়েছে।
দুর্ঘটনার (Ahmedabad Plane Crash) প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। বিমান দুর্ঘটনা নানা কারণে ঘটতে পারে, তাই নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া কিছু বলা সম্ভব নয়। বোয়িং জানিয়েছে, তারা দুর্ঘটনার খবর পেয়েছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করছে।
এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই বোয়িং-এর শেয়ার বাজারে প্রায় ৪.৯ শতাংশ পড়ে যায়। বোয়িং-এর সরবরাহকারী Spirit AeroSystems এবং ইঞ্জিন প্রস্তুতকারী GE Aerospace-এর শেয়ারের দামও প্রায় ২ শতাংশ করে কমে যায়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই 787 সিরিজের বিমানের আগে কখনো কোনো মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেনি। ২০১৩ সালে একবার ব্যাটারির সমস্যার কারণে উড়ান স্থগিত করা হয়েছিল, কিন্তু তখন কেউ আহত হয়নি। বোয়িং-এর 737 MAX মডেলটি যদিও এর আগে দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণে কয়েক বছর ধরে গ্রাউন্ডেড ছিল।
গত বছর বোয়িং আবার সমালোচনার মুখে পড়ে, যখন 737 MAX 9 মডেলের একটি বিমানে মাঝআকাশে দরজার একটি অংশ খুলে যায়। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ কিছুদিনের জন্য ওই মডেলের উড়ান বন্ধ করে দেয় এবং নতুন করে মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
এ দিন বোয়িং-এর CEO কেলি অর্টবার্গ এক বিবৃতিতে বলেন, “Air India ফ্লাইট 171-এর যাত্রী ও ক্রু সদস্যদের প্রিয়জনদের প্রতি আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি, এবং আহমেদাবাদে ক্ষতিগ্রস্ত সকলের পাশে রয়েছি।”