ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে বড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার হাইকোর্ট রাজ্যের নতুন ওবিসি বিজ্ঞপ্তির ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে। এই রায়ের ঠিক পরদিন, বুধবার বিধানসভা চত্বরে লাড্ডু বিতরণ করে উৎসব পালন করল বিজেপি (BJP)।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি (BJP) বিধায়করা আনন্দের সঙ্গে এই মিষ্টি বিতরণ করেন। শুধু বিধায়ক নন, সাধারণ মানুষকেও লাড্ডু বিলি করা হয়। বাজনা-বাজিয়ে এই উৎসবে অংশ নেন বিজেপির (BJP) বিধায়করা। বিজেপির বক্তব্য, হাইকোর্টের এই রায় “হিন্দু ওবিসিদের অধিকার রক্ষার পথে এক বড় জয়”।
মঙ্গলবারই কালীগঞ্জে উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে শুভেন্দু ঘোষণা করেছিলেন, পরদিন বিধানসভায় বিজেপির (BJP) পক্ষ থেকে এই রায়কে ঘিরে উৎসব করা হবে এবং মিষ্টি বিতরণ হবে। তিনি জানিয়েছিলেন, হিন্দু ওবিসি সম্প্রদায়—যেমন কুর্মী, কামার, কুম্ভকার, স্বর্ণকার, নাপিত প্রভৃতি—যারা রাজ্য সরকারের ‘তোষণমূলক রাজনীতি’র কারণে কোণঠাসা হচ্ছিল, তাদের ন্যায্য অধিকার রক্ষা হয়েছে আদালতের হস্তক্ষেপে।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বারবার হিন্দু ওবিসিদের নিয়ে তোষণের রাজনীতি করেছে। আদালত সেই অন্যায়কে থাপ্পড় মেরে থামিয়ে দিয়েছে।”
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার রাজ্যের নতুন ওবিসি তালিকার বিজ্ঞপ্তির ওপর স্থগিতাদেশ দেয়। এই বিজ্ঞপ্তিতে মোট ১৪০টি জনজাতিকে ওবিসি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। আদালত জানিয়ে দেয়, এই তালিকার ভিত্তিতে কোনও নতুন ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া যাবে না বা সরকারি চাকরি ও ভর্তি সংক্রান্ত সুবিধা মিলবে না।
তবে যাঁরা ২০১০ সালের আগেই ১৯৯৩ সালের আইন অনুযায়ী ওবিসি হিসেবে সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। তাঁরা আগের নিয়ম অনুযায়ী চাকরি বা ভর্তি সংক্রান্ত সুবিধা পাবেন।
রাজ্য সরকারের মতে, এই বিজ্ঞপ্তি ছিল সংখ্যালঘুদের ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণিকে সংরক্ষণ দেওয়ার উদ্দেশ্যে, কিন্তু আদালত মনে করেছে এই প্রক্রিয়া যথাযথ হয়নি। সেই কারণেই অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
এই রায়ের প্রেক্ষিতে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিজেপি ফের নতুন করে আক্রমণ শানিয়েছে, এবং বিষয়টি আরও রাজনৈতিক মোড় নিচ্ছে।