টানা বৃষ্টিপাত, ভূমিধস ও ভয়াবহ বন্যায় উত্তরের পূর্বাঞ্চলজুড়ে (North East)তাণ্ডব শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।
আবহাওয়া দফতর (IMD) জানিয়েছে, বাংলাদেশের উপর সৃষ্ট একটি নিম্নচাপ উত্তর-পূর্ব (North East) দিকে সরে গিয়ে দুর্বল হলেও ৩১ মে পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতে অতি ভারী থেকে অতি তীব্র বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
অসমে (North East) সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা। কাজিরাঙা ও গৌহাটিসহ ছ’টি জেলায় জল ঢুকেছে। কামরূপ মেট্রো জেলায় ভূমিধসে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন মহিলা। রাজ্যে ১০,০০০-রও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। বহু জায়গায় শহরের রাস্তাঘাট জলমগ্ন, স্কুল বন্ধ, কর্মীদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। গুয়াহাটি বিমানবন্দরের পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে।
১৮টি জেলায় জারি হয়েছে ‘রেড অ্যালার্ট’, ৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টার ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় সতর্কতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অরুণাচল প্রদেশে, বানাসেপ্পা রোডে ভূমিধসে দুটি পরিবারের গাড়ি খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনায় সাতজনের মৃত্যু হয়, যাঁদের মধ্যে ছিল দুই শিশু ও এক গর্ভবতী মহিলা। দুর্ঘটনায় আরেকটি গাড়ি অল্পের জন্য রক্ষা পায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুদিন ধরে রাস্তাটি বিপজ্জনক ছিল, কিন্তু সতর্কবার্তার কোনও ব্যবস্থাই ছিল না।
মিজোরামের লাওংতলাই এলাকায় ভয়াবহ ভূমিধসে শুক্রবার রাতে ভেঙে পড়ে পাঁচটি বাড়ি ও একটি হোটেল। ধ্বংসস্তূপের নিচে বেশ কয়েকজন মায়ানমার নাগরিক আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ত্রিপুরার পশ্চিম জেলার খোয়াইয়ে এক ১৬ বছরের কিশোর মৎস্য শিকার করতে গিয়ে ডুবে যায়। বহু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ২০০-র বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে।
উত্তর সিকিমে চুংথাং ও থেং এলাকায় প্রবল বর্ষণে ভূমিধস দেখা দিয়েছে। বহু বাড়ি ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত। প্রশাসন জানিয়েছে, পাহাড়ের ঢালে জমা জল মাটি আলগা করে দিয়েছে, ফলে একাধিক জায়গায় ধস দেখা গেছে।
মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের বহু এলাকা, যেমন কাকওয়া, থাংমেইব্যান্ড, সাগোলব্যান্ডে জল জমে গেছে। টানা বৃষ্টিতে যান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।
বর্তমানে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রতিটি রাজ্যে উদ্ধারকারী দল ও প্রশাসনের কর্মীরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।