কাকদ্বীপে ভুয়ো ভোটারকাণ্ডে এবার উঠে এল এক সরকারি কর্মীর নাম (Fake Voter)। ভারতীয় ডাকবিভাগে কর্মরত সৈকত দাসের পরিচয় ঘিরে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। স্থানীয় সূত্র ও অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, সৈকতের পরিবার আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা (Fake Voter) ছিল। সেখান থেকে এসে তারা কাকদ্বীপে বসবাস শুরু করে। যদিও সৈকতের দাবি, তাঁর পরিবার অনেক বছর আগেই বাংলাদেশ (Fake Voter) থেকে চলে এসেছে, এবং তিনি ভারতের নাগরিক।
সৈকতের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের প্রতাপাদিত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ গোবিন্দরামপুরে। বয়স ৩২। বর্তমানে তিনি নামখানার পোস্ট অফিসে কর্মরত। কিন্তু নাগরিকত্ব ঘিরে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, সৈকতের নাম ভোটার তালিকায় উঠেছে তাঁর মায়ের আগেই। যা স্বাভাবিক নিয়মে হওয়া সম্ভব নয়। সৈকত নিজেও স্বীকার করেছেন, “হ্যাঁ, আমার মায়ের আগে আমার নাম ভোটার তালিকায় উঠেছে। আত্মীয়-স্বজনদের সাহায্যে এই নাম তোলা হয়েছিল।” কিন্তু কারা সেই আত্মীয়, সে বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ সৈকত। জন্ম শংসাপত্র নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। তিনি স্বীকার করেন, তাঁর জন্মের কোনও সরকারি শংসাপত্র নেই।
সৈকতের মা রেভারানি দাসের বক্তব্য, “আমার ছেলে আত্মীয়দের সাহায্যে নাম তুলেছে। এই এলাকায় বহু পরিবারই বাংলাদেশ থেকে এসেছে। সবাইকেই কেউ না কেউ চেনে। আমরা অনেকদিন আগেই এসেছি।”
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা এক ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছেন। তাঁদের দাবি, সৈকতের বাবা সহদেব দাস এখনো বাংলাদেশে নিয়মিত যাতায়াত করেন। এমনকি, তিনি বাংলাদেশের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন বলেও শোনা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে সহদেব দাস মুখ খুলতে চাননি। তিনি বাড়ি থেকে বের হননি। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য ভূয়ো নথিপত্র ও ভোটার আইডি তৈরি করেই সৈকত নাগরিকত্বের দাবিদার হয়েছেন।
এই ঘটনা সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে জন্ম শংসাপত্র ছাড়াই ভোটার তালিকায় নাম তোলা হল সৈকতের? তাঁর মায়ের আগেই ছেলের নাম তালিকাভুক্ত হল কীভাবে? কীভাবে একজন সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত হলেন যদি নাগরিকত্ব নিয়েই ধোঁয়াশা থাকে? কে বা কারা এই কাজে সাহায্য করল?
এই ঘটনায় প্রশাসনিক স্তরে তদন্ত দাবি করছেন অনেকেই। এলাকাজুড়ে ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে এটা শুধুই একটি ব্যক্তিগত অনিয়ম নয়— বরং গোটা প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থার জালিয়াতি ফাঁস করে দেবে বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
এখন দেখার, প্রশাসন এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, আর আদৌ সৈকতের নাগরিকত্ব বৈধ কি না, তা তদন্তে উঠে আসে কি না।