বিহারে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এবার উঠে এল কলকাতার যোগ। এই দুর্নীতির সঙ্গে নিট পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডেরও জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি (ED Raids)। এই দুটি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খোঁজে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে ইডি (ED Raids)।
ইডি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম ছাড়াও বিহার, রাঁচি ও লখনউ মিলিয়ে মোট ১১টি জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালানো হয়েছে (ED Raids)। তদন্তে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর বিহারে কনস্টেবল নিয়োগের জন্য ২১ হাজারেরও বেশি শূন্যপদের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ১৮ লাখ পরীক্ষার্থী। বিহারের ৫২৯টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা হয়েছিল। পরে অভিযোগ ওঠে, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়। তদন্তে নামে বিহার পুলিশ এবং পরে ইডি (ED Raids)।
তদন্তে উঠে আসে যে, উত্তর কলকাতার সিঁথি এলাকার একটি প্রিন্টিং সংস্থা বিহার পুলিশের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ছাপার বরাত পায়। কিন্তু তারা নিজেরা না ছেপে বরাত দিয়ে দেয় অন্য একটি ছাপাখানাকে (ED Raids)। প্রশ্নপত্র ছাপার পর তা সরাসরি বিহার সরকারের হাতে না দিয়ে পাঠানো হয় পাটনার একটি প্রাইভেট গোডাউনে। সেখানেই ছয় দিন ধরে রাখা হয় প্রশ্নপত্রগুলি।
সেই সুযোগেই বিহারের কুখ্যাত দুর্নীতি চক্রের মাথা সঞ্জীব মুখিয়া ও তার গ্যাং চুরি করে ওই প্রশ্নপত্র। পরে সেই প্রশ্ন মোটা টাকায় বিক্রি করা হয় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে। এই ঘটনায় কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক প্রিন্টিং সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনা থেকে কৌশিক কর ও সঞ্জয় দাস এবং কলকাতা থেকে সুমন বিশ্বাসকে গ্রেফতার (ED Raids) করা হয়েছে। লখনউ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে আরেক অভিযুক্ত।
ইডির (ED Raids) দাবি , শুধু বিহার পুলিশের প্রশ্নপত্রই নয়, ২০২৪ সালের নিট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ছাপানো হয়েছিল কলকাতার ওই একই প্রিন্টিং সংস্থাগুলিতে। সেই প্রশ্নপত্রও ফাঁস করা হয় এবং তার বিনিময়ে প্রচুর টাকা লেনদেন হয়।
প্রিন্টিং সংস্থাগুলির মাধ্যমেই বিহার ও নিট পরীক্ষার দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। এই টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়, যার তদন্ত চলছে। এরই সূত্র ধরে ইডি মধ্যমগ্রামে অভিযুক্তদের বাড়িতে এবং কলকাতার এক আইনজীবীর দফতরে তল্লাশি চালায়। সেখানে প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই দুটি দুর্নীতির মামলায় আরও অনেককে জেরা করা হচ্ছে।