Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • দেশ
  • দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি এখনও স্বপ্ন! মেঘ নেই, তবুও উড়ল বিমান, IIT কানপুরের রিপোর্টে ‘সামান্য ঝিরিঝিরি’— প্রশ্নের মুখে পরীক্ষা
দেশ

দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি এখনও স্বপ্ন! মেঘ নেই, তবুও উড়ল বিমান, IIT কানপুরের রিপোর্টে ‘সামান্য ঝিরিঝিরি’— প্রশ্নের মুখে পরীক্ষা

DELHI ARTIFICIAL RAIN
Email :17

দিল্লির আকাশে বহু প্রতীক্ষিত “কৃত্রিম বৃষ্টি” এখনও অধরা। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর উপরে মেঘ বপনের (cloud seeding) পরীক্ষা চালাল IIT কানপুর, কিন্তু প্রত্যাশিত ফল মিলল না (Delhi Artificial Rain)। পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিং সিরসা জানালেন, আর্দ্রতার ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষা চালানো হয়েছে। তবে IIT কানপুরের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে— নোয়ডা ও গ্রেটার নোয়ডায় সামান্য ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ধরা পড়েছে।

মন্ত্রী সিরসা জানান, সাধারণত এই ধরনের পরীক্ষার (Delhi Artificial Rain) জন্য আর্দ্রতা প্রয়োজন কমপক্ষে ৫০ শতাংশের উপরে। কিন্তু মঙ্গলবারের পরীক্ষায় ছিল মাত্র ১০–১৫ শতাংশ আর্দ্রতা। “আমরা জানতাম মেঘ কম, কিন্তু IIT কানপুর আত্মবিশ্বাসী ছিল। তাই তাদের অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করেই ট্রায়াল করা হয়,” বলেন তিনি।

IIT কানপুরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবরের পরীক্ষায় দুটি বিমান উড়ানো হয়েছিল— একটি দুপুরে, অপরটি বিকেলে। কানপুর থেকে মেরঠ পর্যন্ত রুটে দুটি ফ্লাইটে মোট ৭–৮ কিলোগ্রাম মেঘ বপনের মিশ্রণ ছড়ানো হয় (Delhi Artificial Rain)। প্রথম উড়ানটি দুপুর ১২টা ১৩ মিনিটে উড়েছিল, মেরঠে পৌঁছে ২টা ৩০ মিনিটে নামে। দ্বিতীয় উড়ানটি ৩টা ৪৫-এ উড়ে বিকেল ৪টা ৪৫-এ ফিরে আসে। দুটি ফ্লাইটই উত্তর দিল্লি, ময়ূর বিহার, করোলবাগ, বুড়াড়ি, খেখরা প্রভৃতি এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিল।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই সময় নোয়ডায় ০.১ মিমি ও গ্রেটার নোয়ডায় ০.২ মিমি বৃষ্টির প্রমাণ মিলেছে V। তবে এই ক্ষণিক ঝিরিঝিরির পরেই সামান্য হ্রাস দেখা গিয়েছে বায়ুদূষণে। PM2.5 স্তর কমেছে প্রায় ৬–১০ শতাংশ, আর PM10 কমেছে ১৪–২১ শতাংশ পর্যন্ত। করোলবাগ, বুড়াড়ি ও ময়ূর বিহারের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে এই পরিবর্তন ধরা পড়ে।

দ্বিতীয় দফার ফ্লাইটের পরেও সামান্য উন্নতি দেখা গিয়েছে, যদিও মেঘের ঘনত্ব ছিল অত্যন্ত কম। গবেষকদের মতে, “মেঘ বপনের কণায় কিছুটা ঘন আর্দ্রতা তৈরি হয়েছিল, যা দূষণ কণাগুলোকে নিচে নামতে সাহায্য করেছে।”

মন্ত্রী সিরসা জানান, “এই পরীক্ষায় মোট আটটি ফ্লেয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল, প্রতিটির ওজন প্রায় ২–২.৫ কিলো। প্রতিটি ফ্লেয়ার প্রায় আড়াই মিনিট ধরে জ্বলেছে। সেই সময় আর্দ্রতা ছিল ১৫–২০ শতাংশ।” তিনি আরও বলেন, এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন আর্দ্রতার স্তরে কীভাবে বৃষ্টি তৈরি হয়, তার তথ্য সংগ্রহই ছিল মূল লক্ষ্য।

IIT কানপুরের বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ফ্লেয়ার ছাড়ার পর ১৫ মিনিট থেকে ৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টি হতে পারে। সিরসা বলেন, “যেখানে মেঘ বপন হয়েছে, সেখানে বৃষ্টি হলে সেটা ক্লাউড সিডিংয়ের ফল। আমরা তা-ই পর্যবেক্ষণ করছি।”

সরকার আগামী কয়েকদিনে আরও নয় থেকে দশটি পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। ভারতের আবহাওয়া দফতর (IMD)-এর বাতাসের দিকনির্দেশ অনুযায়ী উত্তর দিল্লি ও আশেপাশের এলাকায় ফোকাস করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, “এটা দিল্লি সরকারের এক বড় পদক্ষেপ দূষণ রোধে। আগের সরকারের মতো আমরা মানুষকে অসুবিধায় ফেলছি না— আমরা বিজ্ঞানের পথে হাঁটছি।” তিনি জানান, এই প্রকল্প সফল হলে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, দিল্লি সরকার গত ২৫ সেপ্টেম্বর IIT কানপুরের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে এই পরীক্ষার জন্য। ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (DGCA) ইতিমধ্যেই অক্টোবর–নভেম্বরের মধ্যে পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে। মূল উদ্দেশ্য— কৃত্রিম বৃষ্টির মাধ্যমে শীতকালে বেড়ে চলা দূষণ কমানো।

তবে আপাতত ফলাফল দেখে বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষ দুই-ই প্রশ্ন তুলছেন— “বৃষ্টি নামাতে চাইছে দিল্লি, কিন্তু মেঘই নেই আকাশে!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts