Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • বিদেশ
  • আমেরিকার অবরোধ ভেঙে বিশ্ব বাণিজ্যের নতুন মানচিত্র আঁকছে ইরান-রাশিয়া! ১৬২ কিমি রেললাইনেই কাঁপছে ওয়াশিংটন
Important

আমেরিকার অবরোধ ভেঙে বিশ্ব বাণিজ্যের নতুন মানচিত্র আঁকছে ইরান-রাশিয়া! ১৬২ কিমি রেললাইনেই কাঁপছে ওয়াশিংটন

IRAN RUSSIA
Email :21

বিশ্ব রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক পালাবদলের ইঙ্গিত মিলছে পশ্চিম এড়িয়ে তৈরি নতুন বাণিজ্যপথে (Iran-Russia Corridor)। মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত ইরান ও রাশিয়া এবার পাল্টা চাল খেলেছে এমন এক পথে, যা আটকানো প্রায় অসম্ভব। ১৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ রাশত-আস্তারা রেললাইন (Rasht-Astara Railway)— নামের মধ্যে সাধারণ মনে হলেও, এই প্রকল্প বদলে দিতে পারে গোটা বিশ্বের বাণিজ্য মানচিত্র।

এই রেললাইনটি (Iran-Russia Corridor) হলো আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহন করিডর বা INSTC (International North South Transport Corridor)-এর হারানো কড়ি। ৭,২০০ কিমি দীর্ঘ এই মহাযোজন সম্পূর্ণ হলে ইউরোপ, রাশিয়া, ইরান ও ভারতকে যুক্ত করবে এক নতুন স্থলপথে। এতে করে জাহাজে যে পণ্য ইউরোপ থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় পৌঁছতে সময় নেয় ৩৭ দিন, তা কমে আসবে মাত্র ১৯ দিনে! পরিবহন খরচও কমবে প্রায় ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ, সুয়েজ খালকে এড়িয়ে একদম বিকল্প বৈশ্বিক বাণিজ্যপথ গড়ে তুলছে মস্কো ও তেহরান (Iran-Russia Corridor)।

প্রকল্পটির মূল অর্থায়ন করছে রাশিয়া— প্রায় ১.৬ বিলিয়ন ইউরো। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত ২০ বছরের একটি Comprehensive Strategic Partnership Treaty-এর অংশ এটি। রাশিয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের হাতেই গড়ে উঠছে এই রেলপথ, যা কেবল সহযোগিতার নয়— বরং ভূ-রাজনৈতিক প্রতিরোধের প্রতীক (Iran-Russia Corridor)।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই করিডর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ভেঙে তৈরি করছে এক নতুন অর্থনৈতিক জোটের ভিত্তি (Iran-Russia Corridor)। একদিকে যখন ওয়াশিংটন ও ইউরোপ ইরান-রাশিয়ার অর্থনীতিকে চাপে রাখছে, অন্যদিকে এই স্থলপথ উভয় দেশকেই পরিণত করছে নতুন যুগের বাণিজ্য কেন্দ্রবিন্দুতে। রেলপথ সম্পূর্ণ হলে প্রতি বছর প্রায় ২০ মিলিয়ন টন পণ্য এই পথে চলাচল করবে— তেল, গ্যাস, খাদ্য, ইস্পাত থেকে শুরু করে যন্ত্রাংশ পর্যন্ত। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই পথকে আটকে দিতে পারবে না মার্কিন নৌবহর বা ইউরোপীয় ব্যাংক।

চিনের নজরও এখন এই করিডরের দিকে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI)-এর সঙ্গে INSTC-র পথ মিলে যাচ্ছে প্রায় পুরোপুরি। অর্থাৎ দক্ষিণ চিন সাগর থেকে বাল্টিক উপকূল পর্যন্ত গড়ে উঠছে এক বিকল্প বাণিজ্যজাল— যা পশ্চিমা প্রভাবমুক্ত। পাশাপাশি BRICS ও সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO)-এর মতো সংগঠনগুলিও এই নতুন বিশ্ব বাণিজ্যব্যবস্থার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে, যেখানে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে ধীরে ধীরে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে।

আরও চমকপ্রদ তথ্য— সম্প্রতি রাশিয়ার স্বীকৃতি পাওয়া আফগানিস্তানও এই করিডরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে, যা দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী IMEC করিডর-কে সম্পূর্ণ পিছনে ফেলে দেবে।

ভারতের IMEC এখনও কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থাকলেও, INSTC ইতিমধ্যেই বাস্তব। ট্রেন চলছে, চুক্তি সই হয়ে গিয়েছে, কাজ শেষের পথে। প্রতিটি রেললাইন যেন পশ্চিমা আধিপত্যে আরেকটি ফাটল ধরাচ্ছে।

রাশিয়া ও ইরানের বার্তা একটাই— “Isolation is obsolete.” অর্থাৎ, বিচ্ছিন্নতা এখন অতীত। বিশ্ব আর একমেরু নয়, বরং গড়ে উঠছে এক নতুন বহু-মেরু বাস্তবতা, যেখানে প্রতিটি রেললাইন পশ্চিমা আধিপত্যের বিরুদ্ধে এক নীরব বিদ্রোহের প্রতীক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts