দক্ষিণ কলকাতার কসবা (Kasba) এলাকার রাজডাঙা গোল্ড পার্কে একটি বহুতলের ফ্ল্যাট থেকে একই পরিবারের তিনজনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতরা হলেন সরোজিৎ ভট্টাচার্য (৭০), তাঁর স্ত্রী গার্গী ভট্টাচার্য (৬৮) এবং তাঁদের বিশেষভাবে সক্ষম ছেলে আয়ুষ্মান ভট্টাচার্য (৩৮)।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় (Kasba) । পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৬টা ১০ মিনিটে খবর আসে, ওই ফ্ল্যাটের দরজা সকাল থেকে বন্ধ। বহুবার ডাকাডাকির পরও কেউ দরজা খোলেননি। সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন (Kasba) ।
খবর পেয়েই কসবা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ দেখে দরজা ভেতর থেকে আটকানো। তারপর কাঠের দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢোকে তারা। ঘরে ঢুকতেই তিনজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় পুলিশ।
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পুলিশের হাতে এসেছে। তাতে আত্মহত্যার দিকেই ইঙ্গিত মিলেছে। পুলিশের অনুমান, তিনজনেই আত্মঘাতী হয়েছেন (Kasba) । তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে আরও কিছু পরীক্ষার রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ।

তদন্তে নেমে পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁদের থেকে জানা গিয়েছে, ওই পরিবার আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল। দীর্ঘদিন ধরেই নানা অসুবিধার মধ্যে ছিলেন তাঁরা।
এক প্রতিবেশীর দাবি, গত পাঁচ-সাত দিন ধরে দম্পতির মধ্যে প্রায়ই তীব্র অশান্তি হত। রোজ চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ শুনতে পেতেন নিচের তলার বাসিন্দারা। কিন্তু তাঁরা বাইরের কারও সঙ্গে কখনও কিছু শেয়ার করতেন না।
এলাকার এক মুদি দোকানদার বলেন, “ওঁরা খুব সাধারণ জীবন যাপন করতেন। একসঙ্গে অনেক জিনিস কিনতেন না। অল্প অল্প করে নিতেন। কিন্তু কখনও ধার রাখতেন না। যদি বিল একটু বেশি হতো, তা হলে নিজেরা ফেরত দিয়ে যেতেন জিনিসগুলো। বাকি রাখা একেবারে পছন্দ করতেন না।”
এই ঘটনায় গোটা এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রতিবেশীরা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে এমন শান্ত পরিবারের মধ্যে এত বড় অন্ধকার লুকিয়ে ছিল। পুলিশ একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে বলে সূত্রের খবর। সেই চিঠির বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই মুহূর্তে পুলিশ ঘটনার পিছনে আর কোনও কারণ বা চাপ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে। তবে আপাতত প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলেই মনে করছে পুলিশ।