আহমেদাবাদের বায়রামজি জিজিভয় মেডিকেল কলেজ ও সিভিল হাসপাতালের চত্বর এখন ধ্বংসস্তূপের (Ahmedabad Plane Crash) ছবি। ভোর থেকে সেখানে চলছে উদ্ধার কাজ। ভেজা কাদামাটি ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পোড়া মালপত্রের মধ্যে JCB-র গর্জন। বিমানের ভেঙে-পড়া অংশ, জ্বলে-পোড়া স্যুটকেস, ছিন্নবিচ্ছিন্ন বস্তু পড়ে আছে হাসপাতালের হোস্টেল প্রাঙ্গণ জুড়ে। একটি গাছ — যেটি কোনোভাবে আগুন ও ধ্বংসাবশেষের বৃষ্টি থেকে রেহাই পেয়েছে — তার নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যাত্রীদের ব্যাগ।
ভবনের মেস-এ এখনো পড়ে আছে ৫০-৬০ জনের জন্য সাজানো খাবারের প্লেট — কেউ আর খায়নি (Ahmedabad Plane Crash) । অনেক প্লেটে অর্ধেক খাওয়া খাবারও দেখা গেছে। বোঝা যাচ্ছে, ভয়ঙ্কর শব্দে সকলেই হঠাৎ ছুটে পালাতে গিয়েছিলেন।
এয়ার ইন্ডিয়ার আহমেদাবাদ-লন্ডন ফ্লাইট AI171 আহমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর (Ahmedabad Plane Crash) থেকে উড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ৬২৫ ফুট উচ্চতা থেকে হু হু করে নেমে আসে। সেটি হোস্টেল চত্বরে থাকা ছয়টি ভবনের একটির পাশ দিয়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে আছড়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়।
বিমানে মোট ২৪২ জন ছিলেন — যার মধ্যে কেবল একজন প্রাণে বেঁচেছেন (Ahmedabad Plane Crash) । বাকি সবাই নিহত বা গুরুতর আহত। বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ার সময় হোস্টেল মেস-এ আঘাত করে। এতে হোস্টেলের পাঁচজন মেডিকেল ছাত্র মারা গেছেন — চারজন ছিলেন এমবিবিএস ছাত্র এবং একজন পিজি রেসিডেন্ট।
হোস্টেল বিল্ডিং বিমানবন্দর কম্পাউন্ডের দেওয়ালের মাত্র কয়েক মিটার দূরে অবস্থিত। সেখানে দুর্ঘটনার পর এখনও পোড়া গন্ধ ও অস্বাভাবিক গরম অনুভূত হচ্ছে। ধ্বংসাবশেষে মিশে রয়েছে ইট-কাঠ, পোড়া জামাকাপড়, ব্যাগ, পড়ে থাকা জুতো এবং একটি বড় গাছ থেকে ঝরে পড়া আম।
ভেতরে ভেঙে পড়েছে মেসের ছাদের একাংশ। এক কোণে রয়েছে যাত্রীদের স্যুটকেস, জামাকাপড় ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র। ১০৮ অ্যাম্বুল্যান্স কর্মীরা জানান, তাঁরা দু’জন চিকিৎসককে উদ্ধার করেছেন (Ahmedabad Plane Crash) , যাঁদের মুখ ঝলসে গিয়েছিল।
বিমানটির ধাক্কায় কলেজ চত্বরে তিনটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে — এর মধ্যে রয়েছে মেস হল ও দুইটি পাঁচতলা আবাসিক ভবন। আগুন ছড়িয়ে পড়ায় দুটি ভবন সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, দেয়াল কালো হয়ে গিয়েছে।

গুজরাট পুলিশ, দমকল, ও অন্যান্য জরুরি বিভাগের দল এখনো ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মাটির নিচে চাপা পড়া মানুষের খোঁজে চলছে কংক্রিট ভেঙে তল্লাশি (Ahmedabad Plane Crash) ।
এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬৫টি মৃতদেহ আহমেদাবাদের সিভিল হাসপাতালে আনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বলেন, বিধ্বস্ত বিমানের ভেতরে তাপমাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে বাঁচার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। তবু একজন যাত্রীর অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়াই যেন ঈশ্বরের ইচ্ছা।
বিমানে থাকা ২৩০ জন যাত্রীর মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ ও একজন কানাডিয়ান। বাকিরা ছিলেন দুইজন পাইলট ও ১০ জন কেবিন ক্রু।
এখনো অনুসন্ধান চলছে বিমানের ব্ল্যাক বক্সের — অর্থাৎ ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার খোঁজার, যাতে বোঝা যায় সেই শেষ মুহূর্তে আসলে কী ঘটেছিল লন্ডনের গ্যাটউইকের পথে রওনা হওয়া ফ্লাইট AI171-র ভেতরে।