রাজনৈতিক সমাবেশ মানেই ব্রিগেড (Brigade) প্যারেড গ্রাউন্ড। কলকাতার রাজনীতির ইতিহাসে এই মাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে নেহরুর ভাষণ, আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রপ্রধানদের সমাবেশ, বামেদের উত্থান-অবসান—সবই দেখেছে ব্রিগেড। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম বিশাল সভাও হয়েছিল এই মাঠেই। তবে এখন অনেকেই বলছেন, ব্রিগেডের সমীকরণ বদলে গিয়েছে।
সম্প্রতি ব্রিগেডে (Brigade) পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার নদিয়ার সভা থেকে সেই অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল supremo মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ধর্মীয় মেরুকরণ করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “গীতাপাঠের জন্য পাবলিক মিটিং করার কী আছে? ধর্ম মানে মানবতা, ধর্ম মানে শান্তি।”
তার পরের দিনই, শুক্রবার এক লক্ষ কণ্ঠে হরিনাম সংকীর্তনের ঘোষণা করল তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর ঘনিষ্ঠ অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের গোসাই পরিষদ। সভাপতি নান্টু হালদার জানান, জানুয়ারিতে ব্রিগেডেই হবে এই বিশাল অনুষ্ঠান। তিনি দাবি করেন, এটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক কর্মসূচি। তাঁর কথায়, “কেউ গীতাপাঠ করছেন, কেউ কোরআন পাঠ করছেন। আমাদের কর্মসূচি একেবারেই ধর্মীয় ও অরাজনৈতিক।”
কেন এই আয়োজন (Brigade) ? নান্টু হালদারের ব্যাখ্যা, ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জন বা SIR নিয়ে মতুয়াদের উদ্বেগ দূর করতেই এই উদ্যোগ। হরিনাম শেষে নির্বাচন কমিশনের কাছে মতুয়াদের নাম তালিকায় রাখার আবেদন জানানো হবে। পাশাপাশি, CAA–র ফর্ম ফিল-আপ করেও এখনও নাগরিকত্ব না পাওয়ার অভিযোগও তুলে ধরা হবে।
এই অসন্তোষেই অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপিতে। বিজেপি নেতা প্রিয়াংগু পাণ্ডে বলেন, “CAA নিয়ে তাঁরা ভুল বুঝেছেন বা কেউ ভুল বুঝিয়েছেন। সব হিন্দুই নাগরিকত্ব পাবেন। মতুয়াদের হরিনাম অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ এলে আমরা যাব। কিন্তু গীতাপাঠে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি।”
ব্রিগেডের মাঠ তাই ফের ধর্ম, রাজনীতি ও ভোটের উত্তেজনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।







