বসিরহাট আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছিলেন ভোলা ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে। লক্ষ্য ছিল সন্দেশখালির ‘বাদশা’ শেখ শাহজাহানের (Seikh Sahajahan) বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া। কিন্তু আদালতে পৌঁছনোর আগেই ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ন্যাজোটের কাছে বয়ারমারি পেট্রোল পাম্পের সামনে হঠাৎই একটি দশ চাকার ট্রাক ভোলার গাড়িকে সজোরে ধাক্কা মারে। মুহূর্তে সব ওলটপালট হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ভোলার ছোট ছেলে সত্যজিৎ ঘোষ এবং গাড়ির চালক শাহানুরের। ভোলা গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান।
ঘটনার পরেই রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েছে (Seikh Sahajahan)। বিরোধীরা এটিকে সাধারণ দুর্ঘটনা বলতে রাজি নন। বিজেপির সরাসরি অভিযোগ, এটি পরিকল্পিত হামলা। তাঁদের প্রশ্ন, ধাক্কা মারার পর ট্রাকচালক কীভাবে সঙ্গে সঙ্গে বাইকে চেপে পালিয়ে গেলেন? বাইকই বা এল কোথা থেকে? তাঁদের দাবি, ভোলাকে টার্গেট করেই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।
শাহজাহানের (Seikh Sahajahan) বিরুদ্ধে রেশন দুর্নীতি সহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাঁর বাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনী গেলে হামলার ঘটনাও ঘটেছিল। পরে পুলিশ বহু অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে। বুধবার ছিলেন তাঁর দায়ের করা একটি ‘মিথ্যা মামলার’ সাক্ষ্যগ্রহণ। সেই মামলাতেই সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছিলেন ভোলা ঘোষ।
ভোলা একসময় শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে অনৈতিক কাজকর্ম নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। অভিযোগ, ২০২১ সালে শাহজাহানের লোকজন ভোলার বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। ভয়ে তিনি বহুদিন এলাকা ছেড়ে ছিলেন। শাহজাহান গ্রেফতার হওয়ার পরে আবার ফিরেছিলেন। আজকের ঘটনার পরে তাঁর বড় ছেলে বিশ্বজিৎ ঘোষ সাফ বলছেন, এটি মোটেই দুর্ঘটনা নয়, সরাসরি খুনের চেষ্টা।
বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাজনৈতিক মহলে ঘুরছে একটাই প্রশ্ন—বুধবার আদালতে ভোলা ঠিক কোন কোন মামলায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছিলেন? এবং ঠিক সেই দিনই কি এই ‘দুর্ঘটনা’ সত্যিই কাকতালীয়?




