জ্যামাইকায় আছড়ে পড়েছে ভয়ঙ্কর হারিকেন মেলিসা (Hurricane Melissa)। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরে নিউ হোপ উপকূলে ল্যান্ডফল করে এই ঘূর্ণিঝড়, সঙ্গে নিয়ে এসেছে ঘূর্ণিঝড়ের মতোই ধ্বংস। ঘণ্টায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া বাতাস, মুষলধারে বৃষ্টি এবং বিশাল জলোচ্ছ্বাসে তছনছ হয়ে গিয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলগুলি। সরকারি ভাষায়— এটি “একটি ঐতিহাসিক বিপর্যয়” (Hurricane Melissa)।
হারিকেনের (Hurricane Melissa) আঘাতে কাঁপছে গোটা দক্ষিণ জ্যামাইকা। বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ধসে পড়া বাড়িঘর, ভেসে যাওয়া সড়ক— চারদিকে শুধু জল আর ধ্বংসস্তূপ। নিউ হোপ থেকে শুরু করে কিংস্টন পর্যন্ত বাতাসে উড়ে গিয়েছে ছাদ, উপড়ে গিয়েছে বিশাল গাছ। শহরের রাস্তাগুলি নদীতে পরিণত হয়েছে (Hurricane Melissa)।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস (Andrew Holness) সরাসরি সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “এটি এক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি। ক্যাটাগরি ৫ ঝড়ের ধাক্কা সহ্য করার মতো পরিকাঠামো এই পৃথিবীতেই কোথাও নেই। জ্যামাইকার দক্ষিণাঞ্চল সরাসরি আঘাত পেয়েছে। আমরা জানতাম, এটি কঠিন হবে— কিন্তু এর মাত্রা ভয়াবহ।”
হোলনেস (Hurricane Melissa) আরও জানান, দেশের দক্ষিণ অঞ্চল— বিশেষ করে কিংস্টন, ক্ল্যারেনডন ও সেন্ট এলিজাবেথ— এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থায়। তিনি নাগরিকদের উদ্দেশে আবেদন জানিয়েছেন, কেউ যেন ঘর থেকে না বের হন। “আমি প্রার্থনা করছি আমাদের নাগরিকদের জন্য। আমরা প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু প্রকৃতির এই শক্তিকে রোখা অসম্ভব,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকার ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে (Hurricane Melissa)। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিমানবন্দর, স্থগিত গণপরিবহন, জারি হয়েছে বাধ্যতামূলক উচ্ছেদ নির্দেশ। উপকূলীয় ও দক্ষিণাঞ্চলীয় পারিশগুলির হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই ৮০০টির বেশি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা প্রস্তুত থাকলেও প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ার (Hurricane Melissa) কারণে আপাতত তাদের মোতায়েন করা সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হোলনেস বলেছেন, “এটি জ্যামাইকার ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঝড়। আমরা এখন এক ঐতিহাসিক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, এটি এখনও শেষ হয়নি।”
আবহাওয়াবিদদের মতে, মেলিসা সাম্প্রতিক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হারিকেনগুলির (Hurricane Melissa) একটি, যার প্রভাবে সমুদ্রের ঢেউ ২০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হচ্ছে। উপকূলবর্তী গ্রামগুলোতে ইতিমধ্যেই প্লাবন শুরু হয়েছে। উদ্ধারকাজে নৌবাহিনী ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সহযোগিতা নেওয়া হতে পারে।
জ্যামাইকায় এখন শুধু বেঁচে থাকার লড়াই। বাতাসে উড়ছে গাছ, বৃষ্টিতে ডুবে গেছে শহর, আতঙ্কে গৃহবন্দি লক্ষাধিক মানুষ। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন— “আমরা প্রার্থনা করছি, যেন জ্যামাইকা এই ঝড় থেকে আবার উঠে দাঁড়াতে পারে।”







