পাথরপ্রতিমায় বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) সভায় আচমকাই তুমুল উত্তেজনা। মঞ্চের সামনে থেকে একের পর এক কণ্ঠে উঠে এল দাবি — “রাষ্ট্রপতি শাসন চাই! রাষ্ট্রপতি শাসন চাই!” জনতার এই আওয়াজে মুহূর্তেই চাঞ্চল্য ছড়ায় সভামঞ্চে। তখন মাইক্রোফোন হাতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) বলেন, “জনগণ আওয়াজ তুলুন! আমার হাতে যদি ক্ষমতা থাকত, এক ঘণ্টাও লাগত না রাষ্ট্রপতি শাসন লাঘু করতে।”
ভিড়ের প্রতিক্রিয়ায় শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) এই বক্তব্য ঘিরে নতুন করে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, “একজন বিরোধী দলনেতা কী করে গণতন্ত্রের ধ্বংসের কথা বলেন? রাষ্ট্রপতি শাসন কোনও খেলনা নয়, এটা বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করা হয়। শুভেন্দুবাবু হতাশা থেকে এসব বলছেন, কারণ আগামী নির্বাচনে বিজেপির আসন ৫০-এর নিচে নেমে যাবে।”
অন্যদিকে, তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে, শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) সভার আগে থেকেই এলাকায় ক্ষোভ ছিল। কুলতলি ও পাথরপ্রতিমা যাওয়ার পথে শুভেন্দুকে ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান শোনাতে হয়, দেখানো হয় কালো পতাকা। তৃণমূলের দাবি, “ওটা সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ, কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে জনরোষ।”
এর আগেও শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) আরামবাগের সভা থেকে প্রকাশ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “নো এসআইআর, নো ইলেকশন। যদি রাষ্ট্রপতি শাসন হয়, তৃণমূল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উবে যাবে। শুধু বালি মাফিয়া আর পুলিশে ভর করে চলছে এই সরকার।”
এই মন্তব্যের পরেই রাজনৈতিক মহলে ফের তোলপাড়। কারণ, এর আগে দুর্গাপুর সফরে গিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও বলেছিলেন, “বাংলার মানুষ চাইছেন ৩৫৬ ধারা লাগু হোক।” সেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যের পর থেকেই রাজ্যজুড়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল — তবে কি সত্যিই দিল্লির নজর পড়েছে বাংলায়?
এবার শুভেন্দুর পাথরপ্রতিমার সভার মন্তব্য সেই জল্পনায় ফের ঘি ঢেলেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মন্তব্যের পর রাজ্যের রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হবে। বিজেপি নেতৃত্ব যেখানে বারবার প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ তুলছে, সেখানে তৃণমূল বলছে — “জনগণ ভোটে জবাব দেবে, গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা বলা মানে গণতন্ত্রের অপমান।”
রাজ্যজুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন — শুভেন্দুর এই ‘এক ঘণ্টা’ মন্তব্য কি শুধু হতাশার বহিঃপ্রকাশ, নাকি এর পিছনে রয়েছে বড় কোনও রাজনৈতিক বার্তা?
বাংলার রাজনীতির আকাশে ফের ঘনাচ্ছে মেঘ — পাথরপ্রতিমা থেকে যে আওয়াজ উঠল, তা আগামী দিনে আরও বড় ঝড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।