পশ্চিমবঙ্গের বহুল আলোচিত শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন মোড়। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chaterjee) বারবার দাবি করে এসেছেন যে তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। বৃহস্পতিবার আলিপুরের সিবিআই বিশেষ আদালতেও তিনি (Partha Chaterjee) একই দাবি তুললেন। এদিন একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ-সহ মোট ২১ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করলেন বিচারক বিশ্বরূপ শেঠ। সিবিআইয়ের দায়ের করা এত বড় মামলায় এই প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে চার্জ গঠন হল। খুব শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে বিচারপ্রক্রিয়া।
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chaterjee)ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির থাকতে দেখা যায়। চোখে কালো চশমা পরে তিনি জানালেন, আগের দিনই শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চোখের অপারেশন হয়েছে। আদালতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি সরাসরি বলেন, “আমি শিক্ষামন্ত্রী ছিলাম, কিন্তু আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। যারা আমাকে দোষী বলছেন, তারা অসৎ কথা বলছেন।”
এরপরেই তিনি ইঙ্গিতপূর্ণভাবে দায় চাপিয়ে দেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের উপর। এই দুই প্রশাসনিক কর্তাই বর্তমানে জেলবন্দি। বিচারকের মুখেও এদিন তাদের নাম উঠে আসে। এমনকি, নিয়োগ কমিটির প্রাক্তন প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিনহার কথাও শোনা যায় আদালতে।
বিচারক বিশ্বরূপ শেঠ স্পষ্ট ভাষায় পার্থকে (Partha Chaterjee) উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনিই তো এসপি সিনহা, কল্যাণময়দের মতো ব্যক্তিদের পদে বসিয়েছিলেন।” জবাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ কণ্ঠে জানালেন, “আমি ২৫ বছর বিধায়ক ছিলাম। আমার একটি সম্মান রয়েছে। আমাকে সাড়ে তিন বছর ধরে আটক রাখা হয়েছে। এখন আমার মুক্তি পাওয়া উচিত। এসএসসি সম্পূর্ণ স্বশাসিত সংস্থা। তারা নিজেরাই নিয়োগ করেছে। আমি মন্ত্রী হওয়ার আগেই সুবীরেশ চেয়ারম্যান ছিলেন, কল্যাণময়ও তখন থেকেই ছিলেন। আমাকে মিথ্যা ফাঁসানো হচ্ছে।”
তাঁর জোরালো দাবির পরও আদালত তাঁর আর্জি খারিজ করে দেয়। পার্থর চাওয়া ছিল মামলার দায় থেকে অব্যাহতি, কিন্তু বিচারক চার্জ গঠন করে তাঁকে বিচারপ্রক্রিয়ার আওতায় আনলেন। অর্থাৎ, এই মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও বিচার মুখোমুখি হতে হবে।