পড়শি দেশগুলিতে একের পর এক রাজনৈতিক অশান্তি। নেপাল আর বাংলাদেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জনতার বিক্ষোভে। এই পরিস্থিতিতেই ভারতের সংবিধানকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে গর্ব প্রকাশ করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত (CJI)।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছিল। বিষয় ছিল—রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল নিয়ে রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি কতদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবেন, সে ব্যাপারে আদালত সময়সীমা বেঁধে দিতে পারে কি না। সেই শুনানির মাঝেই মুখ্য বিচারপতি (CJI) বি.আর. গাভাই বলেন, “আমরা আমাদের সংবিধান নিয়ে গর্বিত। দেখুন, পাশের দেশগুলিতে কী হচ্ছে।” তখন বিচারপতি বিক্রম নাথ যোগ করেন, “বাংলাদেশও।”
আদালত (CJI) সরাসরি তুলে ধরে নেপালের পরিস্থিতি। টানা ছাত্র আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলি মঙ্গলবারই (৯ সেপ্টেম্বর) পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। আর গত বছর বাংলাদেশে ছাত্রদের নেতৃত্বে হওয়া গণ-আন্দোলনে ক্ষমতা হারায় শেখ হাসিনার সরকার।
শুনানির সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা মন্তব্য করেন, “১৯৭৫ সালে যখন ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন, তখন মানুষ তাঁকে শিক্ষা দিয়েছিল। কেবল কংগ্রেস নয়, ইন্দিরা নিজেও আসন হারান। পরে আবার অন্য সরকারও মানুষকে সামলাতে পারেনি। তখন সেই একই মানুষ ইন্দিরাকে ফিরিয়ে এনেছিল।” এর জবাবে সিজেআই গাভাই বলেন, “…এবং বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে।” মেহতা উত্তর দেন, “হ্যাঁ, এটাই সংবিধানের শক্তি। এটা রাজনৈতিক যুক্তি নয়।”
এই সময় নেপালের অশান্তি আরও ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। ছাত্র-আন্দোলনের তৃতীয় দিনে সেনাবাহিনী দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেয়। রাতভর দাঙ্গা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের ঘটনায় সেনারা জরুরি আদেশ জারি করেছে। বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে বিধিনিষেধ, তারপর রাতভর জারি থাকবে কারফিউ। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কড়াকড়ি বলবৎ থাকবে।
এরই মধ্যে দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়েছে নেপালের সংসদ ভবন, রাষ্ট্রপতির দফতর, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন, সুপ্রিম কোর্ট, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অফিস এবং শীর্ষ নেতাদের বাড়িতেও। গোটা দেশ কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।