ভারতের বিরুদ্ধে গোপনচরবৃত্তির (ISI Agent) বড়সড় চক্র ফাঁস করল দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল। নেপালের এক নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে, যিনি (ISI Agent) ভারতীয় সিম কার্ড পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর হাতে পৌঁছে দিচ্ছিলেন।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির নাম প্রভাত কুমার চৌরাসিয়া (ISI Agent) (৪৩)। নেপালের বিরগঞ্জের বাসিন্দা তিনি। ২৮ অগস্ট দিল্লির লক্ষ্মীনগর এলাকা থেকে তাঁকে পাকড়াও করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলার একটি আধার কার্ড ব্যবহার করে চৌরাসিয়া মোট ১৬টি ভারতীয় সিম কিনেছিলেন (ISI Agent)। পরে সেগুলো চোরাপথে নেপালে পাঠানো হয়। তদন্তে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে অন্তত ১১টি সিম কার্ড পাকিস্তানে পৌঁছেছিল। সেই সিম ব্যবহার করে লাহোর ও বাহাওয়ালপুরে আইএসআই এজেন্টরা হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট চালাচ্ছিল।
বাহাওয়ালপুর, যেটি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে কুখ্যাত, সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনার অপারেশন সিন্ধুর সময়ে নজরে আসে। সেখানকার মার্কাজ সুভান আল্লাহ নামের জঙ্গি ক্যাম্পে হামলা চালায় ভারত। পুলিশের দাবি, প্রভাতের সরবরাহ করা ভারতীয় সিম সেখানেই ব্যবহার করা হচ্ছিল ভারতবিরোধী কাজকর্মে।
গ্রেফতারের সময় প্রভাতের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি ডিজিটাল ডিভাইস, খালি সিম প্যাকেট এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে। জেরায় তিনি স্বীকার করেছেন, ২০২৪ সালে এক নেপালি মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে তাঁর যোগাযোগ হয় আইএসআই-এর সঙ্গে। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল— সাংবাদিক পরিচয়ে তাঁকে আমেরিকার ভিসা পেতে সাহায্য করা হবে। এর বদলে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ভারতীয় সিম কার্ড জোগাড় ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের।
প্রভাতের জন্ম ১৯৮২ সালে নেপালে। পড়াশোনা করেছেন ভারতের বিহারের মোতিহারিতে। ইনফরমেশন টেকনোলজিতে স্নাতক হওয়ার পর প্রথমে তিনি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করেন। পরে ২০১৭ সালে কাঠমান্ডুতে একটি লজিস্টিকস সংস্থা চালু করলেও সেটি ব্যর্থ হয়। বিদেশে কাজের সুযোগ খুঁজতে গিয়েই তিনি আইএসআই-এর ফাঁদে পড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনায় ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করেছে স্পেশ্যাল সেল। প্রভাতের যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ও সহযোগীদের খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে।