রাজ্য রাজনীতির অন্যতম চর্চিত মুখ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ফের বিতর্কের কেন্দ্রে। কিছুদিন আগেই তাঁর দলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে তীব্র জল্পনা চলছিল রাজনৈতিক মহলে। সেই জল্পনার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন বিতর্কে জড়ালেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি (Dilip Ghosh) ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভাইরাল ভিডিয়ো ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রবল চাঞ্চল্য। সেই ভিডিয়োকে ঘিরেই এবার সরাসরি লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, একটি গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।
লিখিত অভিযোগে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) জানিয়েছেন, পরিকল্পিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়ানো হয়েছে, যার একমাত্র উদ্দেশ্য হল তাঁকে কালিমালিপ্ত করা। তিনি দাবি করেছেন, এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে কারা রয়েছেন, তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করুক পুলিশ। তাঁর কথায়, “কে বা কারা এই গভীর ষড়যন্ত্র করছে, সেটা চিহ্নিত করুক তদন্তকারীরা। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।”
এই ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত রাজনীতি। ভিডিয়ো ভাইরালের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় এক প্রবীণ বিজেপি নেতাকেও প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গিয়েছে। তৃণমূল কটাক্ষ করে বলেছে, এটি গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই বহিঃপ্রকাশ।
এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সদ্য প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমি ওই ভিডিয়ো দেখিনি, দেখার আগ্রহও নেই। আজকের প্রযুক্তির যুগে যে কোনও কিছু নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো সম্ভব। আর কারও ব্যক্তিগত জীবনে কী হচ্ছে, সেটা নিয়ে মন্তব্য করার অধিকার কারও নেই।” তিনি আরও যোগ করেন, “দিলীপদা অভিযোগ করেছেন, সেটা তাঁর অধিকার। তবে কোনও অভিযোগ যদি না থাকে, তাহলে এই নিয়ে এত জলঘোলা করার কিছু নেই।”
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের দিন সস্ত্রীক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে খোশমেজাজে দেখা গিয়েছিল দিলীপ ঘোষকে। এরপর থেকেই বিজেপির অন্দরমহলে অসন্তোষ তৈরি হয়। অনেকেই মনে করেন, তৃণমূলে তাঁর যোগদানের সম্ভাবনা প্রবল। এমন জল্পনার মাঝেই ২১ জুলাই শহিদ দিবসে তৃণমূলের সমাবেশে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে গুঞ্জন চরমে পৌঁছেছিল।
তবে সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিলীপ ঘোষ সেদিন খড়গপুরে বিজেপির সভায় হাজির হন। সেখানে বলেন, “আমি নাকি তৃণমূলে যাচ্ছি! এই সব বলে দলের ভিতরেই অনেকে কর্মীদের বিভ্রান্ত করেছেন। এরা ডিম-ভাত খাওয়া পার্টি।”
এর পরেই এবার সরাসরি অভিযোগের পথে দিলীপ। কারও নাম না করে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই পুরো ষড়যন্ত্রের পেছনে সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। এখন দেখার, পুলিশের তদন্তে আসলে কী উঠে আসে।