Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • Important
  • ১৩ রাজ্যের পুলিশকে ছাপিয়ে দিল বিধাননগর! পাঁচ বছরের তল্লাশির পর ধরা পড়ল দেশের সবচেয়ে চতুর ‘ঠগবাজ’, লুট করে ফেরত দিত চুরি করা জিনিস!
রাজ্য

১৩ রাজ্যের পুলিশকে ছাপিয়ে দিল বিধাননগর! পাঁচ বছরের তল্লাশির পর ধরা পড়ল দেশের সবচেয়ে চতুর ‘ঠগবাজ’, লুট করে ফেরত দিত চুরি করা জিনিস!

most wanted
Email :2

যাঁকে ধরতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছিল দেশের ১৩টি রাজ্যের পুলিশ, যাঁকে ধরতে হোয়াটসঅ্যাপে আলাদা গ্রুপ খুলে দিন-রাত নজরদারি চালানো হয়েছিল— অবশেষে সেই ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ঠগবাজকে গ্রেফতার করল বিধাননগর পুলিশ (Bidhan Nagar Police)। রবিবার রাতে এক চমকপ্রদ অভিযানে কেরল থেকে ধরা পড়ে ভারতের সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রতারকদের মধ্যে একজন, যিনি প্রতারণা করেও যেন “ভদ্র অপরাধী” হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কারণ, তিনি লুট করতেন, টাকা নিতেন, কিন্তু কয়েক দিন পর আবার সেই চুরি করা জিনিস— ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ল্যাপটপ, এমনকি মোবাইল পর্যন্ত— ফেরত পাঠিয়ে দিতেন ভুক্তভোগীর ঠিকানায় (Bidhan Nagar Police)!

পুলিশ সূত্রে (Bidhan Nagar Police) জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা, সম্ভবত বেঙ্গালুরুতে তাঁর বাড়ি। তবে বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন বহু বছর আগেই। বাবা-মা নিজেই ত্যাজ্যপুত্র করেছেন তাঁকে, কারণ ছেলে একের পর এক প্রতারণায় জড়িয়ে পড়েছিল। তারপর থেকেই অভিযুক্ত রাজ্য বদলে পালিয়ে বেড়াতেন— কখনও হায়দরাবাদ, কখনও পুনে, কখনও কলকাতা, কখনও কেরল।

তদন্তকারীরা (Bidhan Nagar Police) জানিয়েছেন, সাধারণত বিলাসবহুল হোটেল বা বড় শহরের ডরমেটরিতে উঠে প্রতারণা চালাত এই ঠগবাজ। সেখানে থাকা পর্যটকদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিত। একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, আড্ডা, ঘোরাঘুরির পর মাঝরাতে সেই ‘বন্ধুর’ সর্বস্ব নিয়ে চম্পট দিত সে। অভিযোগ, ওই ভুক্তভোগীদের ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে দামি জিনিস কেনা, টাকা তোলা— সব করত সে। তবে অপারেশন শেষ হলেই, অবিশ্বাস্যভাবে, সব জিনিস ফেরত পাঠাত ‘স্পিড পোস্ট’-এ! যেন এক দুনিয়াদার প্রতারক, যার নিজস্ব “নৈতিক কোড” রয়েছে।

বিধাননগর পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর জানা যায়, এই প্রতারিতদের টাকাতেই সম্প্রতি ১৫টি নতুন আইফোন কিনেছিল অভিযুক্ত, যার মোট দাম প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। তল্লাশিতে উদ্ধার হয়েছে একাধিক আধার কার্ড, চল্লিশটি সিম কার্ড, একাধিক ব্যাংক পাসবই ও নানা ডিজিটাল ডিভাইস।

তাহলে কীভাবে ধরা পড়ল এই ধূর্ত প্রতারক, যাঁকে ১৩ রাজ্যের পুলিশ ধরতে পারেনি?
সূত্রের খবর, পাঁচ বছর ধরে এই অভিযুক্তকে খুঁজছিল বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ বাহিনী। তার গতিবিধি এতটাই চালাকির সঙ্গে বদলাত যে, লোকেশন ট্র্যাক করেও মুহূর্তে উধাও হয়ে যেত। পুলিশের একাধিক অভিযান ব্যর্থ হয়। অবশেষে বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা কৌশল বদলায়। নতুন টেকনিক্যাল নজরদারি শুরু হয়, তৈরি হয় বিশেষ ডিজিটাল ট্র্যাকিং সেল। সেই সূত্রেই শনিবার রাতে ধরা পড়ে এক গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল— অভিযুক্তের মোবাইল কেরলে অ্যাকটিভ।

এরপরই রাতারাতি বিমানে চেপে কেরলের উদ্দেশে রওনা দেয় বিধাননগর পুলিশের বিশেষ দল। রবিবার গভীর রাতে, নিখুঁত পরিকল্পনায় অভিযুক্তকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। জানা গেছে, ধৃতকে কলকাতায় আনা হচ্ছে, সোমবারই আদালতে তোলা হবে।

পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এই ধূর্ত ঠগবাজকে ধরতে সত্যিই রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালাতে হয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ একত্রিত হয়ে যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তথ্য শেয়ার করত, সেখানে আমরাও সক্রিয় ছিলাম। অবশেষে ৫ বছরের তল্লাশির পর আমরা ওঁকে ধরতে পেরেছি। এই প্রতারণা চক্রের পরিধি বিশাল, তদন্ত চলবে।”

দেশজুড়ে যাঁকে নিয়ে পুলিশের মাথাব্যথা, সেই প্রতারক অবশেষে ধরা পড়ায় স্বস্তি প্রশাসনের। কিন্তু তাঁর বুদ্ধিমত্তা, ধূর্ততা ও অদ্ভুত আচরণ— “চুরি করে ফেরত দেওয়ার” অভ্যাস— এখন গোটা দেশেরই আলোচনার বিষয়।

বিধাননগর পুলিশের এই সাফল্য এখন ভাইরাল— কারণ এই অভিযান যেন সরাসরি সিনেমার গল্পকে ছাপিয়ে গেল বাস্তবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts