Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • বিনোদন
  • “এটা কামব্যাক নয়, এটা কামালব্যাক!” — আবারও প্রমাণ করলেন তিনিই রাজা
বিনোদন

“এটা কামব্যাক নয়, এটা কামালব্যাক!” — আবারও প্রমাণ করলেন তিনিই রাজা

Email :12

Thug Life সিনেমার প্রথমার্ধে যেটা আমরা দেখতে পাই, তা বর্তমান সময়ের অনেক তামিল গ্যাংস্টার সিনেমার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না (Thug Life)—তা হলো সত্যিকারের নাটক।

গল্পের শুরু ১৯৯৫ সালের পুরনো দিল্লির এক ব্যস্ত ভবনে, যেখানে দুই গ্যাংয়ের মধ্যে কথিত ‘শান্তি বৈঠক’ চলছে। একদিকে রয়েছে রঙ্গারায়া সাক্তিভেল (কামাল হাসান), অন্যদিকে সদানন্দ (মহেশ মাঞ্জরেকর)। বাইরে পুলিশ ঘিরে ফেলেছে এলাকা (Thug Life)। ঠিক সেই উত্তেজনার মাঝখানে এক গরিব বাবা, ছেলে ও মেয়ে সকালবেলা খবরের কাগজ বিলি করছে।

এই দৃশ্যগুলো বাস্তব, সংলাপগুলো স্বাভাবিক আর নিঃশব্দে ভারী (Thug Life)। কামাল হাসানকে এই অংশে ডি-এজ করে দেখানো হয়েছে, কিন্তু তার কোনো জাঁকজমকপূর্ণ ‘হিরো এন্ট্রি’ নেই। পুরো গল্পটাই দৃশ্যের প্রয়োজন অনুযায়ী গড়ে উঠেছে—এবং শেষ হয় সেই বাবার গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর মাধ্যমে, আর সাক্তিভেল সেই ছোট Amar (Silambarasan TR)-কে কাঁধে তুলে পুলিশের গুলির আড়ালে ‘ঢাল’ বানিয়ে নিয়ে চলে যায়।

এই অংশের সহজ অথচ প্রভাবশালী গল্প বলার ধরণ দর্শককে আটকে রাখে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, দ্বিতীয়ার্ধে সেই চমকটাই হারিয়ে যায়।

Amar বড় হয়ে ওঠে সাক্তিভেলের বিশ্বস্ত অনুগামী হয়ে (Thug Life)। কিন্তু সে এখনো খুঁজে ফিরছে তার বোন চন্দ্রাকে, যে সেই গুলির ঘটনার সময় হারিয়ে যায়। এই মূল আবেগঘন গল্পকে পাশ কাটিয়ে সিনেমা ঢুকে পড়ে প্রচলিত প্রতিশোধের গ্যাংস্টার ধারায়। সাক্তিভেলের নিজের লোকরাই ক্ষমতার লোভে Amar-কে তার বিরুদ্ধে উসকে দেয়। এরপর শুরু হয় এক রক্তাক্ত ‘শেক্সপীয়রীয়’ বিশ্বাসঘাতকতার গল্প।

গল্পটা মোটামুটি জানা—এক সাধারণ প্রতিশোধের প্লট, নতুন কিছু নেই। কিন্তু কামাল হাসান ও মানি রত্নম একে চরিত্রনির্ভর চলচ্চিত্রে রূপ দিতে চেয়েছেন, যেখানে হিংসা কোনো উত্তেজক উপাদান নয়, বরং বেদনার প্রকাশ।

Thug Life-এর সবচেয়ে বড় সমস‍্যা—তার গঠন। গল্পটা Amar ও তার হারানো বোনকে খোঁজার কথা দিয়ে শুরু হলেও, আমরা চন্দ্রার অস্তিত্বই প্রায় অনুভব করতে পারি না। বরং সিনেমার অধিকাংশ সময় চলে যায় অ্যাকশন দৃশ্যে, গ্যাং লড়াইয়ে।

তবে সব কিছুর মাঝে আলাদা করে দাঁড়িয়ে থাকে রঙ্গারায়া সাক্তিভেল চরিত্রটি (Thug Life) এবং সেই চরিত্রে কামাল হাসানের অতুলনীয় অভিনয়। তার চরিত্র জটিল—একদিকে ঠাণ্ডা মাথার খুনি, আবার অন্যদিকে নারী শিক্ষার পক্ষে, আবার নিজের কাস্ট প্রাইড নিয়ে গর্বিত, তবুও মেয়েকে অন্য জাতের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেন। স্ত্রীকে ভালোবাসলেও তার একজন উপপত্নী আছে, আর নিজের অতিরিক্ত যৌনাকাঙ্ক্ষাকে ‘রোগ’ বলে বর্ণনা করেন।

এক দৃশ্যে, সাক্তিভেলের ভাই মানিকম (নাসার) বলেন—”আমার ভাই কলাপাতায় রাজকীয় ভোজ পরিবেশন করে, কিন্তু এক কোণায় একটু বিষ রেখে দেয়।” এ কথায় সত্য লুকিয়ে আছে।

 

কামাল হাসান এই চরিত্রে যেন নিজের ক্যারিয়ারকেই ব্যাখ্যা করেছেন। একটি দৃশ্যে তিনি চেতনাহীন অবস্থায় যুদ্ধ করেন—চোখ আধবোজা, শরীর রক্তাক্ত, কিন্তু অভিনয় এতটাই প্রাঞ্জল, যেন কামাল হাসান নিছক ঘুমের মধ্যেও সকলকে টপকে যান।

সিলাম্বারাসন TR-ও দুর্দান্ত। Amar চরিত্রে তিনি যেমন বলিষ্ঠ, তেমনি আবেগপ্রবণ। কামালের মতো শক্তিশালী চরিত্রের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি একটুও ফিকে হননি।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে গল্পটা দিশাহীন হয়ে যায়। যে জটিল চরিত্র নাটক দিয়ে শুরু করেছিল, তা শেষ হয় ক্লিশে প্রতিশোধ ও দুর্বল অ্যাকশনে। কামাল-অম্বিরামি (জীবা চরিত্রে) দাম্পত্যের দৃশ্যগুলোও ঠিক জমে না। বরং, এইসব দৃশ্য সাক্তিভেলের চরিত্রের গভীরতাকে ধোঁয়াটে করে তোলে।

শেষত, Thug Life যেন দুটো সিনেমার মাঝখানে আটকে থাকা এক গল্প—একদিকে Amar আর চন্দ্রার করুণ ট্র্যাজেডি, আর অন্যদিকে Rengaraya Sakthivel নামক এক ‘অমর’ রাজার কামব্যাক। এই দুই গল্প মিলছে না, বরং একে অপরকে দুর্বল করছে।

Thug Life হতে পারে Nayakan নয়, কিন্তু তাও এটি একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। কারণ এতে রয়েছে কামাল হাসানের অনবদ্য অভিনয়, কিছু চমৎকার সংলাপ ও দৃশ্যরচনা এবং প্রায়শই উঠে আসা কিছু সত্যিকারের আবেগ। কিছু অংশে ছবিটি ধাক্কা খায় ঠিকই, কিন্তু এর নাট্যরস আর অভিনেতাদের নিবেদনে এই যাত্রাটি একবার হলেও দেখা উচিত।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts