কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা আর সন্ত্রাস ছড়ানো—এই দুয়ের মধ্যে কোনও তুলনা টানা যায় না। কলম্বিয়া সরকারের (Colombia) প্রতিক্রিয়ায় তিনি ‘হতাশ’ হয়েছেন বলেও জানান। কারণ, ভারত যখন সন্ত্রাসবাদের জবাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়, তখন কলম্বিয়া (Colombia) সরকার পাকিস্তানে হতাহতের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছিল, কিন্তু সন্ত্রাসের শিকার ভারতের পাশে দাঁড়ায়নি।
থারুর জানান, তাঁরা পানামা ও গায়ানায় সফর শেষ করে কলম্বিয়ায় (Colombia) পৌঁছেছেন ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে এবং পাকিস্তানের মিথ্যাচার তুলে ধরতে। কিন্তু কলম্বিয়ার (Colombia) সরকার ভারত নয়, বরং সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর পাকিস্তানের জন্য সমবেদনা জানিয়েছে—এতেই হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
থারুর বলেন, “আমরা আমাদের কলম্বিয়ার বন্ধুদের স্পষ্ট করে জানাতে চাই, সন্ত্রাস পাঠানো আর সেই সন্ত্রাস প্রতিরোধ করার মধ্যে কোনও তুলনা হয় না। কেউ আমাদের আক্রমণ করলে আমরা আত্মরক্ষা করতেই পারি। অপারেশন সিন্দূর ছিল সেই আত্মরক্ষারই অংশ।”
তিনি আরও বলেন, হয়তো কলম্বিয়া পুরো পরিস্থিতি বোঝেনি, তাই এই মন্তব্য করেছে। কিন্তু বিশ্বকে এখন পাকিস্তানকে স্পষ্টভাবে বলতে হবে—সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করো।
থারুর মনে করিয়ে দেন, ২২ এপ্রিল পহেলগামে হওয়া জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছিল ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’, যা মূলত পাকিস্তানের মুরিদকেতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা লস্কর-ই-তইবারই একটি শাখা। তিনি বলেন, “যেমন কলম্বিয়া বহু বছর ধরে সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে, তেমনই ভারতও চার দশক ধরে এই যন্ত্রণা ভোগ করছে।”
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের অধিকাংশ সামরিক অস্ত্রই আসে চিন থেকে, যার বেশিরভাগই আক্রমণের জন্য, প্রতিরক্ষার জন্য নয়। “পাকিস্তানের ৮১% প্রতিরক্ষা সরঞ্জামই চিনের থেকে আসে। এগুলোর বেশিরভাগই রণসজ্জা, যা আক্রমণের উদ্দেশ্যে ব্যবহার হয়।”
এছাড়া থারুর চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) ও বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI)-এর কথাও তোলেন। বলেন, চিনের সবচেয়ে বড় BRI প্রকল্প পাকিস্তানে, যা চিনকে পাকিস্তানের গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে যুক্ত করে। এবং ঠিক এই সময়েই কলম্বিয়া চিনের BRI প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার চুক্তি সই করেছে, যা চিনের প্রভাব বিস্তারের বড় পদক্ষেপ।
থারুর সাফ জানিয়ে দেন—“পাকিস্তানের মানুষ উন্নয়ন করতেই পারেন, সেটা চিনের সঙ্গেও হতে পারে। কিন্তু আমাদের সমস্যা সেই দেশটির সঙ্গে, যারা আমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালায়। উন্নয়ন আর সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকতা একসঙ্গে চলতে পারে না।”