বিক্ষোভের আগুনে একের পর এক দেশ জ্বলছে। এবার সেই আগুন ছড়াল ফ্রান্সে (France)। রাজধানী প্যারিস থেকে শুরু করে রেনেস, টুলুজ, মার্সেইয়, লিওঁ—প্রায় সব বড় শহরেই চলছে তীব্র আন্দোলন। রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের থামাতে নেমেছে পুলিশ (France)। চলছে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া, লাঠিচার্জ আর ব্যাপক গ্রেফতার। তবু জনতার রোষ থামানো যাচ্ছে না। ক্ষোভের মূল নিশানা প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ (France)।
আজ, ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ফ্রান্স জুড়ে শুরু হয়েছে এক নতুন আন্দোলন—“Block Everything”। নামের মতোই রাস্তাঘাট, চত্বর, অফিস, বাজার—সবকিছু অবরোধ করে দিচ্ছে বিক্ষোভকারীরা (France)। পথে নেমে ব্যারিকেড গড়ে তুলছে, পুলিশের সঙ্গে হচ্ছে সংঘর্ষ। আন্দোলন শুরুর প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই কমপক্ষে ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী।
ফ্রান্স এখন নানা সংকটে জর্জরিত। অর্থনীতি দুর্বল, মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, বেকারত্ব নিয়ে মানুষের উদ্বেগ তীব্র। তার উপরে রাজনৈতিক অস্থিরতা যেন থামছেই না। আর এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমতে জমতে আজ বিস্ফোরিত হয়েছে “Block Everything” নামে নেতৃত্বহীন এই আন্দোলনে। দ্রুতই এটি ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছে সারা দেশে।
এই আন্দোলনের বড় কারণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। বুধবারই ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন সেবাস্টিয়ান লেকর্নু। গত তিন বছর ধরে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু দেশের মানুষ ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁর উপরে। তাদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্টের অদক্ষ নেতৃত্বের কারণেই বারবার প্রধানমন্ত্রী বদল করতে হচ্ছে। শুধু গত ১২ মাসেই ফ্রান্সে ৪ বার প্রধানমন্ত্রী বদল হয়েছে।
মাত্র গতকালই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রু আয়কর কমানোর বাজেট প্রস্তাব পাশ করাতে ব্যর্থ হন সংসদে। আস্থাভোটেও হেরে গিয়ে তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়। এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেই প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ দ্রুত সেবাস্টিয়ান লেকর্নুকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন। কিন্তু পরিস্থিতি সামলানো তো দূরের কথা, তাঁর শপথগ্রহণের দিনই ফেটে পড়েছে অশান্তির আগুন।
ফ্রান্স এখন কার্যত আন্দোলনের আগুনে দাউদাউ করছে। আর সারা বিশ্বের চোখ আজ প্যারিসের রাস্তায়, যেখানে মানুষ স্লোগান দিচ্ছে একটাই—“Block Everything”!