পশ্চিমবঙ্গের এক পিএইচডি গবেষক অনিরুদ্ধ বেরা বর্তমানে ইজরায়েলের (Israel) তেল আবিবে মিসাইল হামলা থেকে বাঁচতে বাঙ্কারে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ইরান ও ইজরায়েলের (Israel) মধ্যে চলমান যুদ্ধের অষ্টম দিনে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন তিনি।
অনিরুদ্ধ, যিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির বাসিন্দা এবং বর্তমানে তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন, জানিয়েছেন যে ১৩ জুন থেকে ইজরায়েলের (Israel) ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু হওয়ার পর থেকেই তাঁদের প্রতিদিনের জীবনযাপন বদলে গেছে। তিনি ভারতের ‘অপারেশন সিন্ধু’-র আওতায় দেশে ফিরে আসার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন, যদিও পরিস্থিতি তাঁকে খুব চিন্তায় ফেলেছে।
অনিরুদ্ধ বলেন, “আমরা যখন এখানে আসি, তখন আমাদের (Israel) বলা হয় দুটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে — একটি সরকারী অ্যাপ, আর একটি প্রাইভেট অ্যাপ যার নাম ‘রেড অ্যালার্ট’। এই অ্যাপগুলো মিসাইল হামলার প্রায় ১৫-২০ মিনিট আগে সতর্ক করে দেয়, যাতে আমরা নিকটবর্তী বাঙ্কারে পৌঁছাতে পারি। রাডারে হুমকি ধরা পড়লেই সাইরেন বাজে, আর আমাদের ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে বাঙ্কারে চলে যেতে হয়।”
তাঁর কথায় জানা যায়, “বেশিরভাগ সময় আমরা ডর্মেটরির (Israel) নিচেই থাকা বাঙ্কারেই থাকি। যদিও পরিস্থিতি ভয়ানক, তবুও ইজরায়েলের সতর্কবার্তা ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাকে সত্যিই কুর্নিশ জানাতে হয়।”
তিনি বলেন, “ইজরায়েলের (Israel) নাগরিকরা এই পরিস্থিতির সঙ্গে খুব অভ্যস্ত। ৩০ শতাংশ মিসাইল ভূমিতে পড়ে, তবে তাঁদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। আশেপাশে দোকানপাট খোলা আছে, খাবার অর্ডারও করা যায়। মিসাইলের শব্দ পেলেই আমি ১০ মিনিটের মধ্যে বাঙ্কারে পৌঁছে যেতে পারি।”
সম্প্রতি তাঁর অবস্থান থেকে মাত্র ৩-৪ কিলোমিটার দূরে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মিসাইল আঘাত হানে (Israel)। তিনি বলেন, “শব্দ শুনতে পাইনি, কিন্তু টেলিভিশনে দেখেছি। বড় ক্ষতি হয়নি, কিন্তু চিন্তা হওয়াটা স্বাভাবিক।”
তিনি আরও বলেন, “তবুও মানুষ এখানে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছে। কেউ সমুদ্রতটে জগিং করছে, কেউ আবার বিচ ভলিবল খেলছে। একে বলা যায় ‘নতুন স্বাভাবিক’ জীবন।”

ভারতীয় দূতাবাসের ভূমিকাকে প্রশংসা করে অনিরুদ্ধ বলেন, “আমাদের দূতাবাস খুব ভালোভাবে কাজ করছে। তাঁরা অপারেশন সিন্ধু চালু করেছেন, যাতে আমাদের দেশে ফিরিয়ে আনা যায়। আমি রেজিস্ট্রেশন (Israel) করে ফেলেছি, হয়তো খুব তাড়াতাড়িই ফিরে আসব। ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেষ করা যায় না। তাঁরা আমাদের জন্য যথাসাধ্য করছেন।”
পরিবারের কথাও উল্লেখ করেন তিনি, “আমার পরিবার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। তাঁরা চায় আমি দ্রুত ফিরে আসি। আমি এখন সেটা খুব সিরিয়াসলি ভাবছি। কাজ আছে, ঠিকই, কিন্তু যখন খুশি কিছু একটা হয়ে যেতে পারে — সেই চিন্তা থেকেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।”