ইজরায়েলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মধ্যে ইরান (Iran) সরাসরি নাম না করেই পাকিস্তানকে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইরানের দূতাবাসের উপপ্রধান জাভেদ হোসেইনি শুক্রবার জানিয়েছেন, যদি তৃতীয় কোনো পক্ষ এই যুদ্ধে ঢোকার চেষ্টা করে, তবে তার পরিণতি হবে “ভয়াবহ”।
এই মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। যদিও ইরান (Iran) সরাসরি পাকিস্তানের নাম উচ্চারণ করেনি, তবুও স্পষ্ট যে তারা এই সাম্প্রতিক বৈঠকটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
জাভেদ হোসেইনি (Iran) বলেন, “যুদ্ধের মধ্যে যদি কোনো তৃতীয় পক্ষ ঢোকে, তাহলে তার পরিণাম হবে ভয়ঙ্কর। আমাদের এই বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট।”
তিনি আরও বলেন, ইরান (Iran) ভারতের প্রতি কোনো অসন্তোষ পোষণ করে না এবং ভবিষ্যতে আরও গভীর বোঝাপড়া ও সহযোগিতা আশা করে।
পাশাপাশি, ইরানের (Iran) তরফ থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে। হোসেইনি দাবি করেন, আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা আইএইএ (IAEA) ইজরায়েলের হয়ে কাজ করছে এবং জি৭ দেশগুলি সব সময় ইজরায়েলকেই সমর্থন করে।
তিনি বলেন, “আমরা এনপিটি (নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি) সইকারী দেশ, তবুও আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা কোনো অবস্থাতেই শর্তহীন আত্মসমর্পণ করব না।”
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ইরানকে (Iran) উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন “UNCONDITIONAL SURRENDER” — অর্থাৎ ‘শর্তহীন আত্মসমর্পণ’। এই মন্তব্যেরই পাল্টা হিসেবে হোসেইনি এই বক্তব্য রাখেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, জেনারেল আসিম মুনির এক মাসের মধ্যে একদিকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা খামেনেয়ির সঙ্গে বৈঠক করছেন, আবার অন্যদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করছেন — তাহলে কি পাকিস্তান ইরানের পাশে, নাকি আমেরিকার সঙ্গে? এই দ্বৈত ভূমিকা নিয়ে এখন জোর বিতর্ক চলছে।
এরই মধ্যে ইরানের (Iran) দূতাবাস জানিয়েছে, ভারতের ‘অপারেশন সিন্ধু’র প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এই অভিযানের মাধ্যমে ইজরায়েল-ইরান সংঘর্ষে আটকে পড়া ভারতীয় ছাত্রদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
হোসেইনিজানিয়েছেন, ইরানের মাহান এয়ার-এর তিনটি চার্টার্ড ফ্লাইট শীঘ্রই মাশহাদ থেকে দিল্লির উদ্দেশে ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে রওনা দেবে। এখন পর্যন্ত ইরানে থাকা প্রায় ১০,০০০ ভারতীয়র মধ্যে ১,০০০ জনকে ইতিমধ্যেই নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং আরও ফ্লাইটের মাধ্যমে অপারেশন সিন্ধু অব্যাহত থাকবে।