গুজরাটের ডিঙ্গুচা গ্রামের বাসিন্দা হর্ষকুমার রমণলাল পটেল (ডার্টি হ্যারি নামে পরিচিত) যুক্তরাষ্ট্রের (US) আদালতে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। ২০২২ সালে কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে (US) অনুপ্রবেশের সময় চরম শীতে জমে মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় এক পরিবারের চারজন সদস্যের—এই মানব পাচার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় পটেলের সঙ্গী ফ্লোরিডার বাসিন্দা স্টিভ অ্যান্থনি শ্যান্ড (US) (৫০) কে ৬ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে আরও ২ বছর নজরদারির অধীনে রাখা হবে।
মৃতরা—জগদীশ পটেল (৩৯), তাঁর স্ত্রী বৈশালীবেন, ১১ বছরের মেয়ে বিহাঙ্গি ও ৩ বছরের ছেলে ধর্মিক—ডিঙ্গুচারই বাসিন্দা ছিলেন। এই পরিবার কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছিল শীতে, যখন তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যুক্তরাষ্ট্রের (US) বিচার বিভাগ জানিয়েছে, পটেল ও শ্যান্ড একটি বড়সড় মানব পাচার চক্রে যুক্ত ছিল। তারা ভুয়া স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকদের কানাডায় পাঠিয়ে, পরে তাদেরকে বিপজ্জনক পথে সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকিয়ে দিত। পটেল কানাডার মানিটোবা থেকে সীমান্তের কাছে পৌঁছে দিত, শ্যান্ড তাদের গাড়িতে তুলে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেত—সাধারণত শিকাগো।
তদন্তে উঠে এসেছে, এই ধরনের পাচারের জন্য মাথাপিছু খরচ ছিল এক লক্ষ মার্কিন ডলার (প্রায় ৮.৫ কোটি টাকা)।
২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশ সীমান্তের কাছেই মৃত অবস্থায় খুঁজে পায় পটেল পরিবারকে। তারা পর্যটক ভিসায় কানাডায় গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার চেষ্টা করছিল।
সেদিন রাতে, একটি তুষারঝড়ের সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও শ্যান্ড ও পটেল পাচার চালায়। সেই রাতেই এক ইউএস বর্ডার পেট্রোল এজেন্ট শ্যান্ডের গাড়ি তুষারে আটকে পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহে তল্লাশি চালিয়ে দুই অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গ্রেপ্তার করে। এরপর আরও পাঁচজন সীমান্ত পার হয়ে আসতে দেখা যায়, যাদের একজনের শরীরের তাপমাত্রা ছিল বিপজ্জনকভাবে কম, এবং তাঁকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পটেল সাজা ঘোষণার সময় একেবারেই চুপ ছিলেন, কোনও অনুশোচনার চিহ্নও দেখাননি বলে আদালতের রিপোর্টে উল্লেখ আছে। সাজা শেষে তাঁকে ভারতেও ফেরত পাঠানো হতে পারে।