শনিবার ভোররাতে পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশের সংঘাতপূর্ণ আওয়ারান জেলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হলেন বালোচ সম্প্রদায়ের একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল লতিফ (Balochistan Journalist)। তিনি ডেইলি ইনতিকাব এবং আজ নিউজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বালোচ জনগণের মধ্যে তিনি (Balochistan Journalist) অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় এবং সম্মানীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
বালোচ ইয়াকজেহতি কমিটির তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, লতিফকে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবং বালোচ অধিকার রক্ষা সংগঠনগুলোর দাবি, হামলাকারীরা ছিল (Balochistan Journalist) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ এক মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সদস্য। এই সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরেই বালোচিস্তানে ‘রাষ্ট্রের ইচ্ছায়’ দমনমূলক কাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ।
তাঁর (Balochistan Journalist) বিরুদ্ধে ক্ষোভের প্রধান কারণ ছিল, বালোচিস্তানে নিখোঁজ ব্যক্তিদের নিয়ে করা ধারাবাহিক প্রতিবেদন, সেনাবাহিনীর ‘অত্যাচার’ এবং নাগরিক প্রতিরোধের নথিভুক্তি। এই সাহসী রিপোর্টিংয়ের কারণেই তিনি রাষ্ট্রের রোষের শিকার হয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
বালোচিস্তানে বর্তমানে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে এক প্রবল বিদ্রোহ চলছে। আফগানিস্তান এবং ইরানের সীমানা ঘেঁষা এই দরিদ্র প্রদেশটি যদিও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, সেখানে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষ চরম দারিদ্র্যের শিকার।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, উন্নত জীবনের দাবিতে বালোচ জনজাতির শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের জবাবে পাকিস্তান সরকার ব্যাপক দমন-পীড়নের নীতি গ্রহণ করেছে। এতে বহু নিরীহ মানুষ নিখোঁজ, গ্রেফতার ও নিহত হয়েছেন।
গত মাসেই এক ডজন জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ পাকিস্তানকে আহ্বান জানিয়েছিলেন যাতে বালোচ অধিকারকর্মী মাহরাঙ্গ বালোচ-সহ সকল গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হয় এবং বালোচ জনগণের উপর দমননীতি বন্ধ করা হয়।
দীর্ঘ দুই দশক ধরে বালোচ জনগণ অভিযোগ করে আসছেন, পাকিস্তান সরকার তাদের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম এবং নির্বিচারে গ্রেফতার চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও পাকিস্তান সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এই পরিস্থিতিতে আবদুল লতিফের খুনকে অনেকেই ‘কিল অ্যান্ড ডাম্প’ নীতির আরও একটি উদাহরণ হিসেবে দেখছেন, যেখানে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী এবং অধিকারকর্মীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।