দিল্লির বুকে ফের নৃশংস খুন (Delhi murder)। প্রেম, প্রতারণা আর প্রতিশোধের মিশেলে গঠিত এই কাহিনি যেন সিনেমাকেও হার মানায়। নিহত রামকেশ মীনা, বয়স মাত্র ২৪। পেশায় ছিলেন UPSC পরীক্ষার্থী (Delhi murder)। তাঁর সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্ক ছিল ২১ বছর বয়সি ফরেনসিক সায়েন্সের ছাত্রী আমৃতা চৌহানের (Amrita Chauhan)। কিন্তু সেই প্রেমই শেষমেশ রক্তাক্ত পরিণতির দিকে নিয়ে গেল।
দিল্লি পুলিশের দাবি, আমৃতা নিজের বিজ্ঞান ও ফরেনসিক জ্ঞানের অপব্যবহার করেই এই হত্যাকাণ্ড সাজিয়েছিলেন (Delhi murder)। তদন্তে জানা গিয়েছে, ৬ অক্টোবর রাতে আমৃতা তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত কশ্যপ ও এক বন্ধুর সঙ্গে মিলে রামকেশকে গলা টিপে খুন করেন (Delhi murder)। এরপর তাঁর দেহ পুড়িয়ে দেন এবং সেটিকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ বলে চালানোর চেষ্টা করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, হত্যার আসল কারণ ছিল অশালীন ভিডিও ও ছবি। রামকেশের মোবাইলে আমৃতার কিছু ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ছিল (Delhi murder)। তিনি বারবার অনুরোধ করেও রামকেশ মুছতে অস্বীকার করে। উল্টে তিনি সেই ছবি প্রকাশ করার হুমকি দেন। সেই ভয়েই খুনের পরিকল্পনা করে আমৃতা ও তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত।
৬ অক্টোবর রাতের পর থেকেই রামকেশের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সকালে তাঁর ঘরে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ড ঘটে। প্রথমে মনে করা হয়, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তদন্তকারীদের সন্দেহ হয়। কারণ, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়— আগুন লাগার কয়েক মিনিট আগে আমৃতা, সুমিত ও তাঁদের বন্ধু অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
দিল্লি পুলিশের ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করে দেখে, আগুন লেগেছিল ইচ্ছাকৃতভাবে, বিস্ফোরণে নয়। দেহের গলায় গভীর দাগ মিলেছে, যা স্পষ্ট করে খুনের ইঙ্গিত দেয়। পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের বক্তব্য, “আমৃতা ফরেনসিকের ছাত্রী হওয়ায় জানত কীভাবে প্রমাণ নষ্ট করতে হয়। আগুন লাগিয়ে ভেবেছিল, কোনও প্রমাণ থাকবে না। কিন্তু বিজ্ঞান দিয়েই শেষমেশ ধরা পড়ে গেল সে।”
এই ঘটনার পর থেকে দিল্লি জুড়ে তীব্র আলোড়ন। একদিকে এক প্রতিভাবান UPSC প্রার্থীকে এমন নৃশংসভাবে খুন, অন্যদিকে এক শিক্ষিত তরুণীর এমন পরিকল্পিত অপরাধ— সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন উঠছে, ‘প্রেমে প্রতারণা এতোটা পৈশাচিক হতে পারে?’
রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ছাত্র মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ— সকলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। পুলিশের দাবি, এটি কেবল প্রেমঘটিত অপরাধ নয়, বরং গভীর মানসিক বিকারের প্রতিফলন।
বর্তমানে তিন অভিযুক্তকেই হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশের অনুমান, খুনের পরিকল্পনা তৈরি হয়েছিল কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই।











