অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্যি! দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বছরের এক ছাত্রীর ওপর অ্যাসিড হামলার (Delhi Acid attack) ঘটনায় ঘটল চাঞ্চল্যকর মোড়। যাঁর মেয়ের ওপর অ্যাসিড ছোড়া হয়েছিল, সেই বাবাই নাকি পুরো ঘটনার ছক কষেছিলেন— এমনটাই দাবি করেছে দিল্লি পুলিশের সূত্র। তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তকে ফাঁসানোর জন্যই মেয়েকে ব্যবহার করা হয়েছিল ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রে (Delhi Acid attack)।
ঘটনাটি ঘটেছিল রবিবার সকালে, উত্তর দিল্লির অশোক বিহারের লক্ষ্মীবাই কলেজের সামনে। অভিযোগ ছিল, জিতেন্দ্র নামের এক ব্যক্তি ও তার দুই সঙ্গী — ইশান ও আরমান — মোটরবাইকে চেপে এসে তরুণীর ওপর অ্যাসিড ছোড়ে (Delhi Acid attack)। তরুণী মুখ ঢেকে ফেলায় প্রাণে বেঁচে যান, তবে দুই হাতে মারাত্মক দগ্ধ হন। এরপরেই ঘটনাটি দেশজুড়ে তীব্র আলোড়ন তোলে।
কিন্তু সোমবার পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে একের পর এক রহস্য ফাঁস হতে শুরু করে। সূত্রের খবর, ওই তরুণীর বাবা আকিল স্বীকার করেছেন, তিনি নিজেই এই হামলার ছক করেছিলেন (Delhi Acid attack)। কারণ, অভিযুক্ত জিতেন্দ্রের স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করতে চলেছিলেন। তাই প্রতিশোধ নিতে ও জিতেন্দ্রকে ফাঁসাতে এই নৃশংস পরিকল্পনা করেন তিনি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, তরুণী নিজেই একটি টয়লেট পরিষ্কার করার অ্যাসিডের বোতল এনে দিয়েছিলেন। সেই অ্যাসিড দিয়েই হামলার নাটক সাজানো হয় (Delhi Acid attack)। আকিলের সঙ্গে জিতেন্দ্রর শুধু ব্যক্তিগত বিরোধই ছিল না, তাঁর দুই সহযোগী ইশান ও আরমানের সঙ্গেও বিবাদ চলছিল। তাই ওই তিনজনের নামেই এফআইআর দায়ের করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সকাল ১০টার দিকে তরুণী কলেজে অতিরিক্ত ক্লাসে যাচ্ছিলেন। সেই সময় হামলা ঘটে। ঘটনার পর আহত অবস্থায় তাঁকে দিল্লির দীপচন্দ বন্দু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকেই পুলিশকে খবর পাঠানো হয়।
প্রথমে তরুণী জানিয়েছিলেন, জিতেন্দ্রই নাকি তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে অনুসরণ করছিল এবং এক মাস আগে তাঁদের মধ্যে ঝগড়াও হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, পুরো গল্পটাই সাজানো ছিল। তদন্তকারীরা সিসিটিভি ফুটেজে দেখেন, জিতেন্দ্রকে ঘটনার সময় অন্যত্র, দিল্লির করোল বাগের একটি পার্কিং লটে দেখা যাচ্ছে। এমনকি যে মোটরবাইকটি হামলায় ব্যবহারের দাবি করা হয়েছিল, সেটিও করোল বাগেই উদ্ধার হয়।
এই চাঞ্চল্যকর মোড়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে— একজন বাবা কীভাবে নিজের মেয়েকে ব্যবহার করে এমন ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করতে পারেন? সামাজিক মহলে নিন্দার ঝড়। নারী নিরাপত্তা নিয়ে ফের শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। ছাত্র সংগঠন NSUI এই ঘটনার কঠোর সমালোচনা করেছে। তাদের বক্তব্য, দিল্লিতে নারীদের নিরাপত্তা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, আর পুলিশের তদন্তে এই ঘটনার পৈশাচিক দিক সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের প্রমাণ।
অন্যদিকে, পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। অ্যাসিড হামলার আসল উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার পিছনে আরও কেউ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।











