খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের আগে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিএলও-দের (BLO) নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন উঠছে। ঠিক এই সময়েই উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহে এক বিএলও-র বাড়িতে দুষ্কৃতীদের হামলার অভিযোগ ঘিরে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে মানব চন্দ্র নামে ওই বিএলও-র (BLO) বাড়িতে ইট ছোড়া হয়, দরজায় লাথি মেরে ভয় দেখায় দুষ্কৃতীরা। বাড়িতে তাঁর বয়স্ক বাবা-মা রয়েছেন। এই ঘটনায় তিনি অত্যন্ত ভীত বলে জানিয়েছেন। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। খড়দহ থানায় ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনার আগেই সুপ্রিম কোর্ট থেকে রাজ্যকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বিএলও-দের (BLO) পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত মন্তব্য করেছিলেন যে রাজ্যের বহু বিএলও হুমকির মুখে আছেন এবং এই পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এসআইআর প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বিএলও-দের—বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ, ফর্ম বিতরণ, সংগ্রহ ও ডিজিটাইজেশন। এই কাজগুলোকে কেন্দ্র করেই নানা এলাকায় বিএলও-দের উপর চাপ ও হামলার অভিযোগও বাড়ছে।
খড়দহের মানব চন্দ্র জানান, কারা এই হামলা চালিয়েছে তিনি বলতে পারবেন না, তবে ঘটনাটি যে তাঁর কাজের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত (BLO) , সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে যদি কারও নাম বাদ যায়, তা নিয়ে ক্ষোভ থেকেই এমন হামলা হতে পারে। পাশাপাশি তিনি ব্যারাকপুরের এসডিও ও জেলাশাসককেও বিষয়টি জানিয়েছেন। অন্য বিএলও-রা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নিরাপত্তা না মিললে তাঁরা কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হবেন।
এই ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব মুখ খুলতে নারাজ। তবে বিজেপির রাজ্য নেতা ভক্ত বিশ্বাস দাবি করেছেন, আক্রান্ত বিএলও-দের পাশে রয়েছেন তাঁরা এবং এই ঘটনায় তৃণমূলের লোকজনই জড়িত।
এদিকে একই দিনে পশ্চিম মেদিনীপুরেও ঘটেছে আরেকটি হামলার ঘটনা। মেদিনীপুর সদর বিএলআরও অফিসের ভিতরেই ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয় অস্থায়ী কর্মী অস্থু মল্লিকের উপর। তাঁর মাথা ফেটে যায় এবং তাঁকে গুরুতর অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। কেন এই হামলা, তা এখনও পরিষ্কার হয়নি।
দুই জেলার এই দুই ঘটনা মিলিয়ে রাজ্যে বিএলও-দের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে।













