Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • Important
  • শুভেন্দুর ভিডিয়োয় ক্ষমা চেয়ে ঝাড়খণ্ড পালাচ্ছিলেন তহসিন আহমেদ, ৩০০ কোটির প্রতারণায় গ্রেফতার তৃণমূল ছেলের ভাইপো
জেলা

শুভেন্দুর ভিডিয়োয় ক্ষমা চেয়ে ঝাড়খণ্ড পালাচ্ছিলেন তহসিন আহমেদ, ৩০০ কোটির প্রতারণায় গ্রেফতার তৃণমূল ছেলের ভাইপো

chitfund TMC leader son
Email :1

শেষবার তাঁকে দেখা গিয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয়। সেখানে গলা কাঁপছিল, মুখে অনুশোচনা— সাধারণ মানুষের টাকায় প্রতারণা করার জন্য ক্ষমা চাইছিলেন তহসিন আহমেদ ( Chitfund Scam)। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরই মিলছিল না তাঁর হদিশ। অবশেষে শনিবার রাতে ধরা পড়লেন তিনি ( Chitfund Scam)। আসানসোলের চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত তহসিন আহমেদকে গ্রেফতার করেছে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। অভিযোগ, তিনি ৩০০ কোটিরও বেশি টাকার আর্থিক তছরুপ করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রেফতারের সময় তহসিন ঝাড়খণ্ডের দিকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন ( Chitfund Scam)। তদন্তকারীরা মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে তাঁকে পাকড়াও করে চন্দ্রচূড় মন্দির মোড়ের কাছে। তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার সোনা উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, তিনি আন্তঃরাজ্য পেরিয়ে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছিলেন। রবিবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে ( Chitfund Scam)।

তহসিন আহমেদ প্রায় পাঁচ বছর ধরে ‘বিনিয়োগের নামে ব্যবসা’ চালাচ্ছিলেন ( Chitfund Scam)। মোটা সুদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসানসোল ও তার আশপাশের মানুষদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছিলেন ( Chitfund Scam)। প্রথম দিকে নিয়মিত সুদ দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করেন। তারপর একে একে বিনিয়োগকারীদের টাকা আটকে যায়। অভিযোগ, প্রায় তিন হাজার মানুষ এই চক্রের শিকার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তহসিনের পরিবারের রাজনৈতিক যোগাযোগও ছিল যথেষ্ট প্রভাবশালী। তাঁর বাবা শাকিল আহমেদ তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। তাই তহসিনের ব্যবসায় ‘রাজনৈতিক ছত্রছায়া’ ছিল বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। আসানসোলের তাবড় নেতাদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ।

এই চিটফান্ড প্রতারণা প্রথম প্রকাশ্যে আনেন এক অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ জওয়ান। তিনি আসানসোল উত্তর থানায় প্রথম লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর বক্তব্য, “প্রথমে ৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম, তখন ভালো রিটার্ন পেয়েছিলাম। তারপর আরও ৪১ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। এরপর আর কোনও টাকাই ফেরত পাইনি।” এর পর থেকেই একের পর এক প্রতারিত বিনিয়োগকারী থানায় ভিড় জমাতে থাকেন।

গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ। উত্তেজিত বিনিয়োগকারীরা তহসিনের অফিস ও বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। এমনকি জাতীয় সড়কও অবরোধ করা হয়। জনরোষে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়।

ঘটনা ঘিরে রাজনীতিও তুঙ্গে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজেই বিষয়টি সামনে আনেন। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে তহসিনের ক্ষমা চাওয়ার ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখেন, “আসানসোলে প্রতারণার এই ভয়াবহ ঘটনার তদন্ত ইডি ও সেবির হাতে দেওয়া হোক।” শুভেন্দুর দাবি, “এটি কেবল একটি আর্থিক কেলেঙ্কারি নয়, এর সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক প্রভাবশালীরাও।”

তবে তৃণমূল এই ঘটনায় দূরত্ব বজায় রাখছে। আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সৈয়দ মাহফুজুল হাসান বলেছেন, “শাকিল আহমেদের সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই। তিনি এক সময় সহ-সভাপতি ছিলেন, এখন দলের কোনও পদে নেই।”

তহসিনের গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে আসানসোলের রাজনৈতিক মহল উত্তপ্ত। শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “যাদের রাজনৈতিক মদতে এই ধরনের প্রতারণা চলে, তাদেরও জবাব দিতে হবে।” অন্যদিকে, তৃণমূলের একাংশের দাবি, বিরোধীরা ইচ্ছাকৃতভাবে এই ঘটনায় রাজনীতি করছে।

চিটফান্ড প্রতারণা, ক্ষমা চাওয়ার ভিডিয়ো, পুলিশের অভিযান, রাজনৈতিক টানাপোড়েন— সব মিলিয়ে আসানসোলের এই ঘটনাটি এখন রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, যাঁদের বিশ্বাসের টাকায় এমন প্রতারণা, তাঁদের ন্যায্য বিচার কি আদৌ মিলবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts