বাঘাযতীনের (Baghajatin) বিদ্যাসাগর কলোনিতে হেলে পড়া বহুতল ফ্ল্যাটকাণ্ডে এবার গ্রেপ্তার হলেন ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার কর্ণধার অভিষেক নাগরা। সোমবার সকালে হরিয়ানা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে নেতাজি নগর থানার পুলিশ (Baghajatin)। বাঘাযতীনে (Baghajatin) হেলে পড়া বাড়ি ঠিক করতে হরিয়ানার এই ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, অভিষেক নাগরার সংস্থাই হেলে পড়া ফ্ল্যাটটি সোজা করার দায়িত্ব নিয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ সফল হয়নি, উলটে পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে ওঠে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সংস্থার গাফিলতির ফলেই তাঁদের জীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। এই ব্যর্থতার পেছনে প্রকৃত কারণ কী, কার নির্দেশে এই সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছিল, তা জানতেই পুলিশ অভিষেককে ট্রানজিট রিমান্ডে নিজেদের হেফাজতে নিতে চায়।
কীভাবে ঘটল বিপর্যয়?
গত ১৪ জানুয়ারি বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনির একটি বহুতল ফ্ল্যাট হেলে পড়ে। জানা যায়, আগে থেকেই বিল্ডিংটি ধীরে ধীরে হেলে যাচ্ছিল। বাসিন্দারা বিষয়টি প্রোমোটারকে জানালে, তিনি সেটি সোজা করার জন্য হরিয়ানার এক ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থাকে দায়িত্ব দেন। তবে সংস্থাটি কাজ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়, বরং পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার দু’দিন পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, “এটি সম্পূর্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং ত্রুটি। পুরসভার অনুমতি ছাড়াই প্রোমোটার এমন ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ না নিয়েই হরিয়ানার ওই সংস্থার সাহায্য নেওয়া হয়েছে। গাড়ি তোলার যন্ত্র দিয়ে বিল্ডিং সোজা করার চেষ্টা হয়েছিল, যা চরম ভুল সিদ্ধান্ত।” তিনি আরও দাবি করেন, হরিয়ানার সংস্থাটি কলকাতার মাটির প্রকৃতি বুঝতে পারেনি এবং পাথুরে মাটি ধরে নিয়ে কাজ শুরু করেছিল, যা বিপদ আরও বাড়িয়ে তোলে।
প্রোমোটারের পর এবার গ্রেপ্তার সংস্থার কর্ণধার
এই ঘটনার পর থেকেই অভিষেক নাগরা পলাতক ছিলেন। তাঁর খোঁজে দীর্ঘদিন ধরে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে হরিয়ানায় গিয়ে নেতাজি নগর থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে, এই কাণ্ডে জড়িত প্রোমোটার সুভাষ রায়কে বকখালি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি এখনও পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন অভিষেক নাগরাও।
সূত্রের খবর, সোমবারই ট্রানজিট রিমান্ডে এনে অভিষেক নাগরাকে আদালতে পেশ করা হবে। এই গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তদন্তে নতুন দিক খুলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।