চন্দননগরের বসু পরিবারের পুত্রবধূ ও রাশিয়ান নাগরিক (Russian Wife) ভিক্টোরিয়ার হঠাৎ নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য চরমে উঠেছে। পাঁচ বছরের সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে গত ৭ জুলাই দুপুরে শেষবার দেখা গিয়েছিল তাঁকে, তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র, জারি করা হয়েছে লুকআউট নোটিস (Russian Wife)।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি জানান, এখনও অবধি দেশের কোনও বৈধ রুট দিয়ে দেশ ছাড়েননি ভিক্টোরিয়া (Russian Wife)। সারা দেশের বিমানবন্দর, স্থলবন্দর — সব জায়গায় কড়া নজরদারি চলছে। দিল্লি পুলিশ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও বিদেশ মন্ত্রককে জোরালো তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ (Russian Wife)।
রাশিয়ান দূতাবাসকেও তদন্তে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার বার্তা দিয়েছে আদালত (Russian Wife)। কারণ, ৫ জুলাই ভিক্টোরিয়া স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে রাশিয়ান দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। আদালতের সন্দেহ, দূতাবাসের কোনও আধিকারিকের সহযোগিতায় তিনি (Russian Wife) কোনও বিকল্প পাসপোর্ট ব্যবহার করে গোপনে পালাতে পারেন কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। সেই আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
এদিকে ভিক্টোরিয়ার মা রাশিয়া থেকে পাল্টা অভিযোগ করেছেন — তাঁর মেয়ে নাকি দিল্লিতেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন, তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না।
ভিক্টোরিয়ার কল রেকর্ড, সোশ্যাল মিডিয়া, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, তাঁর অ্যাকাউন্টে ২০০ টাকারও কম অর্থ রয়েছে। তাহলে কীভাবে ১১ দিন ধরে ছেলেকে নিয়ে জীবনযাপন করছেন তিনি, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। দিল্লিতে যেখানে তিনি ভাড়া থাকতেন, সেই ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে — ৭ জুলাই দুপুর ২টা ২০ মিনিটে তাঁকে শেষবার বাড়ির সামনে দেখা গিয়েছিল। সেই দিন থেকেই তাঁর ছেলে স্কুলেও যায়নি।
দিল্লি ও এনসিআর-এর সব এক্সিট পয়েন্ট, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেশের প্রতিটি থানার এসএইচও ও সমস্ত জেলার পুলিশ সুপারকে সতর্ক করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে সোমবার, তার আগে দু’দিন ধরে দেশজুড়ে জোর তল্লাশির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কেন্দ্রকে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
এই ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে আলোচনায় এসেছে বসু পরিবারের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, ভিক্টোরিয়া গুপ্তচরবৃত্তির উদ্দেশ্যেই ভারতে এসেছিলেন। বিয়ের পরে তারা জানতে পারেন, ভিক্টোরিয়ার বাবা রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার কর্মী। এমনকি সন্তানকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এই ঘটনার মোড় যে কোন দিকেই ঘুরতে পারে, তার ইঙ্গিত মিলছে আদালতের তৎপরতা এবং কেন্দ্রীয় তদন্তের গতি দেখে।