ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়ায় গুরুতর গলদ ধরা পড়ায় পশ্চিমবঙ্গের দুই ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও)-এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের সুপারিশ করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, কমিশন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের প্রস্তাব দিয়েছে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বুধবার ঝাড়গ্রামে জনসভা থেকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
সভা মঞ্চ থেকে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের কড়া বিরোধিতা করে মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, “বাংলার সরকারি অফিসারদের বলব নিশ্চিন্তে থাকুন, আমরা আপনাদের জীবন দিয়ে রক্ষা করব। সরকারি কর্মচারীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। কাল আমার দুই অফিসারকে নোটিস পাঠানো হয়েছে, সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমি বলছি—তোমার নির্বাচন কি এখনও ঘোষণা হয়েছে? কোন আইনের বলে নোটিস পাঠাচ্ছ, সাসপেন্ড করছ, এফআইআর করার কথা বলছ? হবে না। আমি কারও শাস্তি হতে দেব না।”
সরকারি কর্মীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) আরও বলেন, “ভয় পাওয়ার কিছু নেই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গান্ধীজিকে নিয়ে একটা গান লিখেছিলেন, যেখানে শেষ লাইন ছিল—ভয় না পেলে ভয় দেখাবে কাকে। আজ অফিসারদের ভয় দেখাচ্ছে, পুলিশকে ভয় দেখাচ্ছে। শুনে রাখুন, আপনাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। প্রয়োজনে জীবন দিয়েও আমরা রক্ষা করব।”
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করে মমতার মন্তব্য, “দুই মাসের জন্য নির্বাচনে আসেন, তারপর উড়ে চলে যান—বসন্তের কোকিলের মতো। এখনও ভোটের অনেক দেরি, কিন্তু এখন থেকেই সাসপেন্ড করা শুরু করেছেন। হরিদাস সব, ক্রীতদাস সব।”
বক্তৃতার এক পর্যায়ে বিজেপিকেও আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “ওরা জানে আমি ভাঙি, কিন্তু মচকাই না। আমাকে জব্দ করতে চাইলে, মানুষ ওদের স্তব্ধ করে দেবে। শান্তিতে থাকতে দিন আমাকে। আমার বিরুদ্ধে যদি বজ্জাতি করেন, আমি টর্নেডো হয়ে যাই, সুনামি হয়ে যাই। তখন আমাকে রোখা খুব মুশকিল। জ্যান্ত বাঘের চেয়ে আহত বাঘ অনেক বেশি ভয়ঙ্কর—আমাদের আহত করার চেষ্টা করবেন না।”