যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর অভিবাসন ইস্যুতে টানা এক সপ্তাহ ধরে উত্তপ্ত। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) কঠোর অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে গণআন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। শুধু লস অ্যাঞ্জেলেস নয়, আমেরিকার প্রায় ৫০টি প্রদেশেই বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে। প্রেসিডেন্টের (Donald Trump) জন্মদিনেও রাস্তায় নামেন লাখো মানুষ। তাঁদের মুখে ছিল “নো কিংস” (আমরা রাজা চাই না), “স্বৈরাচার নিপাত যাক”, “সংবিধান বাঁচাও”—এর মতো স্লোগান।
বিক্ষোভকারীরা রাস্তা, পার্ক ও পাবলিক স্কোয়ার জুড়ে হাতে পোস্টার (Donald Trump) নিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ করছেন। অবৈধ অভিবাসীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার, হঠাৎ হঠাৎ ধাঁধার মতো অভিযান এবং পরিবার থেকে শিশুদের আলাদা করে রাখার মতো পদক্ষেপে দেশজুড়ে জন্ম নিয়েছে প্রবল ক্ষোভ। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে পরিস্থিতি এমন জটিল হয়ে উঠেছে যে, সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে ৪ হাজারেরও বেশি ন্যাশনাল গার্ড সদস্য এবং ৭০০ জন মেরিনস। এই সংখ্যা ইরাক ও সিরিয়ার মিলিত মার্কিন সেনা সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। পেন্টাগনের হিসেবে বর্তমানে ইরাকে প্রায় ২,৫০০ এবং সিরিয়ায় প্রায় ২,০০০ সেনা মোতায়েন রয়েছে। অর্থাৎ, নিজেদের শহরের পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশের যুদ্ধক্ষেত্র থেকেও বেশি সেনা মোতায়েন করেছে দেশে (Donald Trump)।

শহরের রাস্তায় রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনী টহল দিচ্ছে, চালানো হচ্ছে ধরপাকড়। যদিও সবাইকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, কিন্তু “বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর সম্ভাবনা” থাকলেই বহু মানুষকে আটক করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কড়া মনোভাব আরও ক্ষোভ বাড়াচ্ছে নাগরিকদের মধ্যে (Donald Trump)।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন—যা সকলেই জানে তাঁরা পারবেন না—তবে ফেডারেল সরকার হস্তক্ষেপ করবে এবং কঠোরভাবে সমস্যা দমন করবে। ঠিক যেমনভাবে দাঙ্গা ও লুটেরাকে দমন করা উচিত।”
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে আগে থেকেই কড়া অবস্থানে। ১১ এপ্রিল থেকে ‘দ্য এলিয়েন রেজিস্ট্রেশন রিকোয়ারমেন্ট’ নামক এক নতুন অভিবাসন আইন কার্যকর হয়েছে, যার আওতায় অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
সব মিলিয়ে, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমেরিকাজুড়ে নাগরিক অধিকার বনাম কঠোর রাষ্ট্রনীতি—এই দ্বন্দ্ব আরও স্পষ্ট হচ্ছে।