অর্ধনগ্ন, রক্তাক্ত ও ঝলসানো দেহ। কাপড়ে মোড়া অবস্থায় উদ্ধার। দমদম খালপাড়ে শুক্রবার সন্ধেয় মেলে এক রূপান্তরকামীর মৃতদেহ (Kolkata)। মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও খুনের মোটিভ পরিষ্কার নয়, ধরা পড়েনি অপরাধীও (Kolkata)। ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে পুলিশের সক্রিয়তা ও রূপান্তরকামীদের সংগঠনগুলির নীরবতা নিয়েও (Kolkata)।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, সম্ভবত তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতেই। তবে স্থানীয়দের তৎপরতায় আগুন পুরোপুরি ছড়ানোর আগেই পুলিশ এসে উদ্ধার করে দেহ। পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে।
দমদম থানার সাব-ইনস্পেক্টর সৌম্যদীপ সিংহ বলেন, “এখনও পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে খুনের ধরন ও উদ্দেশ্য কিছুটা পরিষ্কার হবে।”
তবে তদন্তে গতি নেই বলেই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, শহরের একপ্রান্তে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হওয়ার পরও প্রশাসনের তরফে যথাযথ উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
ঘটনায় মুখ খুলেছেন এক সমাজকর্মী, যিনি রূপান্তরকামীদের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে প্রিয়ম্বদা হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে বলেন, “রূপান্তরকামীদের নিরাপত্তা নিয়ে বরাবরই পুলিশ উদাসীন। সাধারণ খুনের মামলায় যেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কিছু অগ্রগতি হয়, সেখানে এখানে এখনও তদন্ত প্রায় শূন্য। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, বিভিন্ন রূপান্তরকামী সংগঠনও নীরব ভূমিকা নিচ্ছে। এই নীরবতা উদ্বেগজনক।”
এই ঘটনায় স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীদের একাংশেরও প্রশ্ন, লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে কি এই মামলায় গুরুত্ব কম পাচ্ছে? সমাজের এক প্রান্তে থাকা মানুষদের বিরুদ্ধে অপরাধ হলে কেন প্রশাসনিক তৎপরতায় ফারাক থেকে যায়?
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও ফুটেজ বিশ্লেষণের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে তদন্তকারী দল। তবে প্রশ্ন একটাই—এই হিংস্র অপরাধের বিচার কি আদৌ মিলবে? নাকি পরিচয় আবারও ছাপিয়ে যাবে ন্যায়বিচারকে?