“গরম জলে ২ ঘণ্টা বসলেই ক্যান্সার-থাইরয়েড-সুগার সব ঠিক!”—এই দাবি শুনেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের চক্ষু চড়কগাছ (Water Therapy)। অথচ পূর্ব বর্ধমানের গাংপুর স্টেশনের কাছে এক ব্যক্তি চালাচ্ছেন এমনই এক চাঞ্চল্যকর জল-চিকিৎসা পদ্ধতি (Water Therapy)। নিজেকে ‘কবিরাজ’ বিধানচন্দ্র মান্না বলে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি বলছেন, “জলই ওষুধ, আর শকই পথ্য!(Water Therapy)”
কীভাবে চলছে চিকিৎসা?
TV9-এর প্রতিবেদন অনুসারে এই তথাকথিত ‘ওয়াটার থেরাপি সেন্টারে’ রোগীদের গরম জলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হচ্ছে। কখনও বা শরীরে লাগানো হচ্ছে ইলেকট্রিক শক। ওষুধ নেই, প্রেসক্রিপশন নেই—আছে শুধু গরম জল আর বিশ্বাস! দাবি, এতে হার্ট, কিডনি, লিভার, ব্রেস্ট বা জরায়ুর টিউমার এমনকি বন্ধ্যাত্ব সমস্যাও নিরাময় হচ্ছে।
রোগীরাও করছেন ওষুধ বন্ধ!
চাঞ্চল্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে রোগীদের বক্তব্য। কেউ কেউ বলছেন, “এই চিকিৎসায় আরাম পেয়েছি।” কেউ আবার জানিয়েছে, তারা ওষুধ খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন। স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক উৎসাহ—‘জলেই সব রোগ সারবে’, এই আশায় প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে সেন্টারে।
বিজ্ঞানের যুগে জলেই সব রোগ সারবে?
এই দাবিকে কটাক্ষ করে চিকিৎসকমহলে ইতিমধ্যেই সরব প্রতিক্রিয়া। চিকিৎসক ড. এস আর বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেন, “এটা চিকিৎসা নয়, এটা বুজরুকি। ওয়াটার থেরাপি কোনও বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা পদ্ধতি নয়, রোগ সারবে—এমন প্রমাণ কোথাও নেই।”
প্রশাসনের নজর কোথায়?
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায় বলেন, “এই ধরনের চিকিৎসা সম্পর্কে আমার কোনও তথ্য নেই। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হবে।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, “আমি বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।”
এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার যুগে এমন কার্যকলাপ শুধু আশঙ্কার নয়, বরং জনস্বাস্থ্যের পক্ষেও গুরুতর হুমকি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফ্যাক্টচেক
“ওয়াটার থেরাপি” বা “হাইড্রো থেরাপি” একটি সহায়ক থেরাপি হতে পারে, কিন্তু এর মাধ্যমে কঠিন রোগ নিরাময়ের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।