Shopping cart

TnewsTnews
  • Home
  • বিদেশ
  • Israel America relation: ইসরায়েলকে বাদ দিয়ে উপসাগরে ট্রাম্পের কূটনৈতিক খেলা! বন্ধুত্ব নাকি বিশ্বাসঘাতকতা?
বিদেশ

Israel America relation: ইসরায়েলকে বাদ দিয়ে উপসাগরে ট্রাম্পের কূটনৈতিক খেলা! বন্ধুত্ব নাকি বিশ্বাসঘাতকতা?

Email :4

কার্যত ইসরায়েলকে এড়িয়ে হামাস গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠক করে মার্কিন প্রশাসন (Israel America Relation)। ইতিবাচক বৈঠকের জেরে হামাস বন্দি মার্কিন নাগরিককে ছেড়ে দেয় (Israel America Relation)। এরপরেই আমেরিকার সঙ্গে ইসরায়েল (Israel America Relation)সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে আমেরিকা ও ইসরায়েলের সম্পর্ক (Israel America Relation) আবার ঘনিষ্ঠ হয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হোয়াইট হাউজ সফরে গিয়ে বলেছিলেন (Israel America Relation) , “আপনি হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বন্ধু।” ট্রাম্পও বলেছিলেন (Israel America Relation), “আমরা প্রতিটি বিষয়ে একই পক্ষে আছি।”

কিন্তু সেই উষ্ণ সম্পর্কের ছন্দ হঠাৎই ভেঙে যায় ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘোষণায়। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে—যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে বিমান হামলা বন্ধ করবে, আর হুতিরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা বন্ধ রাখবে।

এই ঘোষণা আসে এমন এক সময়ে, যখন হুতির ছোঁড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের কাছে আঘাত হানে এবং ইসরায়েল পাল্টা হামলায় সানা বিমানবন্দরসহ ইয়েমেনের একাধিক স্থাপনা ধ্বংস করে।

ইসরায়েল বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং আঘাতপ্রাপ্ত। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র যেন শুধু নিজের স্বার্থ রক্ষা করেই ক্ষান্ত হয়েছে—লোহিত সাগরের বাণিজ্য চলাচল সচল রাখা, অথচ হুতি হুমকি সামাল দেওয়ার দায় শুধু ইসরায়েলের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে।

দ্য জেরুজালেম পোস্ট অনুসারে, এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিশ্লেষক গিওরা আইল্যান্ড বলছেন, “আমরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক ধরনের গোপন সঙ্কটে রয়েছি। ওরা আমাদের আর হিসেবেই নিচ্ছে না—বা আরও খারাপ, আমাদের পেছনে কাজ করছে।”

এর মাঝে ট্রাম্প উপসাগরীয় সফরের ঘোষণা দিয়েছেন—সৌদি আরব, কাতার, ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন তিনি। কিন্তু ইসরায়েলকে সফরের তালিকায় রাখেননি, যা নেতানিয়াহু সরকারের জন্য বড় বার্তা।

এই সফরে ট্রাম্প মূলত বৃহৎ বিনিয়োগ চুক্তি, অস্ত্র বিক্রয় ও চীনের প্রভাব মোকাবেলায় কৌশলগত আলোচনা করতে যাচ্ছেন। তবে পর্দার আড়ালে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে গাজা যুদ্ধ, ইরান এবং ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ।

দ্য জেরুজালেম পোস্ট অনুসারে, গাজা যুদ্ধ এই সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছায়া। ট্রাম্প চাইলেও গাজা এড়িয়ে যেতে পারবেন না। উপসাগরীয় নেতারা এখন চাচ্ছেন ইসরায়েলের ‘অবাধ অভিযানে’ লাগাম টানতে। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিচ্ছে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সাহায্য বাড়াতে। ট্রাম্পের জন্য এটা এক দিক থেকে সুযোগ—যদি তিনি একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি বা জিম্মি মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারেন, তবে তিনি নিজেকে দেখাতে পারবেন একদিকে ইসরায়েলের বিশ্বস্ত বন্ধু, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দক্ষ মধ্যস্থতাকারী।

তবে যদি তিনি ব্যর্থ হন, তাহলে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আবারও পরিষ্কার করে দেবেন—যুদ্ধ শেষ না হলে সৌদির সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না।

সৌদি আরব আগেই জানিয়ে দিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ চলাকালীন কোনো চুক্তি নয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতও ইসরায়েলের সঙ্গে প্রকাশ্য ঘনিষ্ঠতা থেকে কিছুটা সরে এসেছে।

তবুও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সম্ভাবনা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি—সেটা শুধু পিছিয়ে গেছে। ট্রাম্প এই সফরে হয়তো কোনও চুক্তি করবেন না, তবে ভবিষ্যতের জন্য পথ প্রস্তুত করার চেষ্টা করবেন। তার টার্গেট হবে, সৌদি আরব কী শর্তে আবার আলোচনায় ফিরবে তা বোঝা।

সেই শর্ত হতে পারে—যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির অনুমোদন, অথবা ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি ‘রাজনৈতিক দিগন্ত’ তৈরিতে ইসরায়েলের প্রতিশ্রুতি।

এদিকে, এই সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বিষয় হলো ইরান। ইসরায়েল মনে করে, এটাই ইরানের বিরুদ্ধে সামরিকভাবে বড় আঘাত হানার সুযোগ। কিন্তু উপসাগরীয় দেশগুলো—বিশেষ করে সৌদি আরব ও আমিরাত—একটি ব্যাপক যুদ্ধের আশঙ্কায় কূটনৈতিক পথেই এগোতে চাইছে।

ট্রাম্প এখন এক ধরনের দ্বিমুখী কৌশল নিচ্ছেন—একদিকে ইরানের ওপর চাপ বজায় রাখা, অন্যদিকে পর্দার আড়ালে নতুন পারমাণবিক সমঝোতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা। এই সফরে তিনি আরব দেশগুলোর সমর্থন চাইবেন।

অবশ্য ট্রাম্পের প্রতিটি বিদেশ সফরেই অর্থনৈতিক অঙ্ক থাকে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। ট্রাম্প চাচ্ছেন ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি, অস্ত্রচুক্তি বা প্রযুক্তি খাতে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে নিজেকে আবারও “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির সফল রূপকার হিসেবে তুলে ধরতে।

দ্য জেরুজালেম পোস্ট-এর তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরব ইতিমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আর আমিরাতের প্রতিশ্রুতি তার চেয়েও বড়—১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার।

এই বিনিয়োগ শুধু ব্যবসার জন্য নয়, বরং রাজনৈতিক কৌশলও। এই অর্থ ঢালার মাধ্যমে উপসাগরীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে চায়—বিশেষ করে এমন সময়ে যখন চীনও তাদের কাছ থেকে কৌশলগত সমর্থন চাইছে।

ট্রাম্প জানেন, দেশের ভেতরে তার জনপ্রিয়তা এখন কম। এই সফরের মাধ্যমে তিনি আবার বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে দৃশ্যমান হতে চাইছেন—একজন ‘চুক্তিবাজ’ নেতা হিসেবে।

ইসরায়েলের জন্য, ট্রাম্পের এই সফরের সাফল্য বিনিয়োগ বা ফটোশুট নয়। আসল প্রশ্ন হলো—এই সফর কি ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি জোরদার করবে? সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের নতুন পথ দেখাবে? আর সবচেয়ে বড় কথা, ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্য নীতির কেন্দ্রে ইসরায়েল থাকবে, না কি ধীরে ধীরে প্রান্তে সরে যাবে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবে ট্রাম্পের উপসাগর সফর—আর তার ভবিষ্যতের মধ্যপ্রাচ্য কৌশলের দিকনির্দেশনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts