সম্প্রতি অভিনেতা অক্ষয় কুমারের ইতিহাস বই থেকে মুঘল অধ্যায় বাদ দেওয়ার দাবির পর এবার একই ইস্যুতে মুখ খুললেন অভিনেতা আর. মাধবন (R Madhavan)। ইতিহাস পাঠ্যক্রমে দক্ষিণ ভারতের রাজবংশ ও সংস্কৃতির পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করলেন তিনি (R Madhavan)। তাঁর দাবি, ভারতের ইতিহাস বইয়ে মুঘল ও ব্রিটিশ শাসনের বিস্তৃত বিবরণ থাকলেও চোল, পাণ্ড্য কিংবা পল্লবদের মতো ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণী সাম্রাজ্যগুলি প্রায় অনুচ্চারিতই থেকে গেছে (R Madhavan)।
এক সাক্ষাৎকারে মাধবন বলেন, “আমি জানি এই কথা বলায় সমস্যা হতে পারে, তবু বলতে বাধ্য হচ্ছি। স্কুলে পড়াকালে ইতিহাস বইয়ে দেখেছি—মুঘলদের নিয়ে আটটি অধ্যায়, হরপ্পা-মহেঞ্জোদাড়ো নিয়ে দুটি, ব্রিটিশ শাসন এবং স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে চারটি অধ্যায় ছিল। অথচ দক্ষিণ ভারতের রাজবংশগুলোর জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র একটি অধ্যায়।”
তাঁর মতে, ইতিহাসে ভারসাম্যহীন এই উপস্থাপনা শুধু বিভ্রান্তিকরই নয়, দক্ষিণের সমৃদ্ধ অতীতকে অবজ্ঞা করার সামিল। “চোল সাম্রাজ্য ২,৪০০ বছরের পুরনো। তাদের সমুদ্রপথে বাণিজ্য, শক্তিশালী নৌবাহিনী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্থাপত্যিক প্রভাব—সবটাই ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রোম পর্যন্ত মশলার বাণিজ্য করত তারা। কিন্তু এই গৌরবের খুব কমই প্রতিফলন দেখা যায় আমাদের পাঠ্যবইয়ে,” — অভিযোগ মাধবনের।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে এমন বিকৃতি কেন? তামিল বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ভাষা, অথচ তা নিয়ে সচেতনতা নেই। দক্ষিণ ভারতের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রভাব চিন, কোরিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। আজও কোরিয়ায় অনেক মানুষ তামিল ভাষার প্রভাবযুক্ত উপভাষায় কথা বলেন। তবু সেই ইতিহাস কোথায়?”
মাধবনের প্রশ্ন—“এই একমুখী ইতিহাসচর্চার জন্য দায়ী কে? কার নির্দেশে এই পাঠ্যক্রম তৈরি হয়েছে? কেন দক্ষিণের রাজাদের গৌরবের কাহিনি পাঠ্যপুস্তকে অবহেলিত?”
অভিনেতার বক্তব্য, ইতিহাসে সব অঞ্চলের অবদানকে সমান গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা উচিত, যাতে ছাত্রছাত্রীরা একটি পূর্ণাঙ্গ ও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি পায় দেশের অতীত সম্পর্কে।