কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় একের পর এক নিরীহ পর্যটকের হত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশ (Pakistani)। রাতারাতি বদলে গেছে গোটা পরিস্থিতি (Pakistani)। শুধু রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক স্তরেই নয়, মানবিক পর্যায়েও এর প্রভাব পড়েছে চরমভাবে (Pakistani)। বিশেষ করে যাঁরা ভারতে চিকিৎসা বা অন্যান্য প্রয়োজনে এসেছিলেন, তাঁদের জন্য পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে সংকটজনক (Pakistani)।
এই প্রেক্ষাপটে আলোচনায় উঠে এসেছে এক পাকিস্তানি পরিবারের ঘটনা, যারা দুই সন্তানের হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য ভারতে এসেছিলেন। নয়াদিল্লিতে উন্নত চিকিৎসার সুযোগে তাঁরা ভারতে এসে পৌঁছান। কিন্তু পহেলগাঁওয়ের হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতি ঘটায় বাতিল হয়েছে সার্ক ভিসা সুবিধা, আর সেইসঙ্গে শুরু হয়েছে উচ্চ সতর্কতা এবং সীমান্তে নজরদারি।
এই পরিস্থিতিতে ভারতে অবস্থানরত ওই পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে দ্রুত দেশে ফেরার জন্য। যদিও দিল্লির হাসপাতাল এবং চিকিৎসকরা তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, পুলিশ ও বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে পরিবারটিকে দ্রুত দিল্লি ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই দুই শিশুর বাবা জানান, তাঁর ৯ ও ৭ বছরের দুই সন্তান জন্মগতভাবে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত। তিনি বলেন,
“আমরা আমাদের সন্তানের চিকিৎসার জন্য প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করেছি। এখন যদি চিকিৎসা অসম্পূর্ণ থেকে যায়, সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হবে। আমি ভারত ও পাকিস্তান উভয় সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি—আমাদের অন্তত চিকিৎসা শেষ করার অনুমতি দেওয়া হোক।”
এদিকে, দুই দেশের সম্পর্কের অবনতির জেরে ভারতে অবস্থানরত বহু পাকিস্তানি নাগরিক দেশে ফিরেছেন এবং পাকিস্তানে অবস্থানরত ভারতীয়রাও দেশে ফিরে এসেছেন। লাহোরের সরকারি সূত্র অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার প্রায় ১০৫ জন ভারতীয় নাগরিক পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে ফিরে আসেন। পরদিন ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে আরও অনেকে ভারতে ফিরে আসেন, আবার কয়েকজন পাকিস্তানি নাগরিকও ভারত থেকে নিজেদের দেশে ফিরে যান।
সীমান্ত পারাপারে উপস্থিত ছিলেন বেলুচিস্তানের সাত সদস্যের এক পাকিস্তানি হিন্দু পরিবার, যারা ভারতে একটি বিবাহের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন, অক্ষয় কুমার বলেন,
“আমরা জানতাম না যে ভারত সরকার আমাদের ভিসা বাতিল করেছে। লাহোরে পৌঁছেই আমরা জানতে পারি।”
এই উত্তেজনার মূল কেন্দ্রে রয়েছে মঙ্গলবার পহেলগাঁওতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলা, যেখানে লস্কর-ই-তৈবা’র প্রক্সি সংগঠন টিআরএফ দায় স্বীকার করেছে। হামলার জেরে ২৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
এর প্রতিক্রিয়া স্বরূপ, ভারতের সুরক্ষা সম্পর্কিত ক্যাবিনেট কমিটি (CCS) নয়াদিল্লিতে জরুরি বৈঠক ডেকে আটারি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় সীমান্তের একাধিক পয়েন্টে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কই নয়, সাধারণ নাগরিকের জীবনযাপন ও মানবিক চাহিদাও পড়েছে গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে।