সময়টা ছিল ২০১৭ সাল। তখনও রাজনীতির ময়দানে সরাসরি নামেননি প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। ভোটের প্রচারে তাঁকে দেখা গেলেও, রাজনৈতিক লড়াই বা দলীয় বৈঠকে তাঁর উপস্থিতি খুব একটা চোখে পড়েনি। সেই সময় পঞ্জাবে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় ফেরানোর দায়িত্বে ছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)। তিনিও তখন রাজনীতিক নন, একজন পেশাদার কৌশলবিদ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ওই বছর একসঙ্গে পঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের নির্বাচনী কৌশল সাজানোর দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)।
পঞ্জাবে কংগ্রেস ফের ক্ষমতায় এলেও উত্তর প্রদেশে ভরাডুবি হয় দলের। সেই হারের পর প্রশান্ত কিশোর প্রকাশ্যে দু’টি কারণ তুলে ধরেছিলেন (Prashant Kishor)। তাঁর বক্তব্য ছিল, একাধিক বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে ভোটের লড়াইয়ে নামানো হয়নি। পাশাপাশি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর পরামর্শকেও গুরুত্ব দেয়নি। এই দু’টি কারণই উত্তর প্রদেশে কংগ্রেসের হারের মূল কারণ বলে তিনি দাবি করেছিলেন।
তারপর কেটে গিয়েছে বহু বছর। রাজনীতির জল গঙ্গা-যমুনা বেয়ে অনেক দূর গড়িয়েছে। প্রশান্ত কিশোর এখন আর শুধু ভোটকুশলী নন, নিজেই রাজনীতিতে নেমেছেন। দল গড়েছেন, কিন্তু ভোটের পরীক্ষায় এখনও সাফল্য পাননি। বিহারের নির্বাচনে তাঁর দল একটিও আসন পায়নি। সেই হারের পরই রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার ঝড় তোলে প্রশান্ত কিশোর ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর বৈঠক।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিহারে এনডিএ জোটের কাছে বিরোধীদের বড় হারের পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করেন প্রশান্ত কিশোর ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। তবে সেই বৈঠকে ঠিক কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খোলেননি কেউই। বৈঠক প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বলেন, তিনি কার সঙ্গে দেখা করছেন বা করছেন না, তা নিয়ে কিছু বলার নেই। অন্যদিকে প্রশান্ত কিশোরও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
বিহারের ভোটে হারের পর লড়াই আরও জোরদার করার বার্তা দিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। এক সময় কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ। ফলে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি পুরনো সেই সম্পর্কই নতুন করে জোরদার হচ্ছে? আগামী দিনে রাজনৈতিক লড়াই আরও শক্ত করতে কংগ্রেস ও প্রশান্ত কিশোর কি আবার একসঙ্গে পথ চলতে চাইছে? আর সেই সমীকরণের কেন্দ্রবিন্দুতেই কি থাকবেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী—এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।









