ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন প্রক্রিয়ায় (SIR) কোনও রকম হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না—রাজ্যের শাসকদলকে কার্যত এই কঠোর বার্তাই দিল নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার দিল্লিতে কমিশনের দফতরে পৌঁছয় তৃণমূল কংগ্রেসের দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গঠিত এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে প্রায় দু’ঘণ্টার বৈঠকে এসআইআর সংক্রান্ত একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরে তৃণমূল (SIR)।
বৈঠকে এসআইআরের জেরে মৃত বিএলও এবং সাধারণ ভোটারদের একটি তালিকা পেশ করেন তৃণমূল সাংসদরা (SIR)। পাশাপাশি তুলে ধরা হয় পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। যদিও বৈঠক শেষে শাসকদলের অভিযোগ, তাঁদের প্রশ্নগুলির কোনও স্পষ্ট উত্তর কমিশন দেয়নি (SIR)। তবে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দিলেও কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিএলও-দের কাজে যেন কোনওভাবেই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বা চাপ সৃষ্টি না হয়, সেই বিষয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার।
সূত্রের খবর, জ্ঞানেশ কুমার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বুথ স্তরের আধিকারিকরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করবেন (SIR)। তাঁদের কাজে বাধা দেওয়া বা প্রভাবিত করার চেষ্টা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, বিএলও-দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়েও নির্বাচন কমিশন আলাদা ভাবে উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের ডিজিপি এবং কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়ে বিএলও-দের সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও রাজনৈতিক দল যাতে তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্যই এই পদক্ষেপ বলে কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে।
তৃণমূল প্রতিনিধি দল বৈঠকে যে পাঁচটি প্রশ্ন তুলে ধরেছিল, তার মধ্যে প্রথমটাই ছিল—ভুয়ো ভোটার বা অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই যদি এসআইআর চালু হয়ে থাকে, তা হলে অন্য সীমান্তবর্তী রাজ্যে এই প্রক্রিয়া হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর কমিশন দেয়নি বলেই দাবি তৃণমূলের। তবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও অনুপ্রবেশকারীই ভারতের ভোটার হতে পারেন না। যাঁরা অবৈধ ভাবে দেশে প্রবেশ করছেন, তাঁদের ভোটাধিকার পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই—এই বার্তাই প্রতিনিধি দলকে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের দাবি (SIR)।
এই বৈঠকের পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে। একদিকে তৃণমূল অভিযোগ করছে, নির্বাচন কমিশন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে কমিশনের কড়া অবস্থান, বিএলও-দের কাজে কোনও আপস নয়—এই দুইয়ের টানাপোড়েনে এসআইআর ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ চরমে উঠছে।











