এসআইআর-এর উত্তেজনাপূর্ণ আবহে মতুয়া ভোটকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। সব রাজনৈতিক দলই দাবি করছে—মতুয়াদের পাশে তারাই রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জায়গায় CAA ক্যাম্প শুরু হওয়ায় নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়েছে। বিশেষ করে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের মতুয়া কার্ড বিতরণকে কেন্দ্র করে আরও ঘনীভূত হয়েছে রাজনৈতিক কূটনীতি। সেই কার্ডের লেখা নিয়েই বনগাঁর প্রথম জনসভায় বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
মমতার দাবি, মাত্র ১০০ টাকা নিয়ে যে মতুয়া কার্ড দেওয়া হচ্ছে, তাতেই এমন কিছু লেখা রয়েছে যা মতুয়াদের ‘বাংলাদেশি’ বলে প্রমাণ করতে চাইছে বিজেপি (Mamata Banerjee)। হাতে সেই কার্ড তুলে নিয়ে মমতা বলেন, “মতুয়া মহাসভার ধর্মীয় কার্ড নিতে পারেন, সেটা আপনার ব্যাপার। কিন্তু ১০০ টাকা নিয়ে লেখা হচ্ছে—মতুয়া মহাসংঘের সদস্য করা হল। আর বলা হচ্ছে, এটা নিয়ে গেলেই ভোটার হয়ে যাবেন। এটা নির্বাচন কমিশনের কোথায় লেখা রয়েছে?”
তারও বেশি তীব্র হলেন পরের অভিযোগে। কার্ডের লেখা পড়ে শোনাতে শোনাতে বললেন (Mamata Banerjee), “এখানে লেখা—এই শংসাপত্র যাকে দেওয়া হচ্ছে, তিনি আগে বাংলাদেশি ছিলেন। মানে এখন সার্টিফিকেট দিয়ে আপনাকে বাংলাদেশি করে দিচ্ছে! আপনাদের আরও ক্ষতি করছে। এসআইআরে ২০০২ সালের ম্যাপিং, আর সার্টিফিকেট দিচ্ছে ২০২৫ সালে। এতে কী প্রমাণ হচ্ছে জানেন? আপনাদের বাংলাদেশি দেখাতে চাইছে।”
মতুয়াদের উদ্দেশে আশ্বাস দিয়ে মমতা (Mamata Banerjee) জানান, “চিন্তা করবেন না। আমরা ছিলাম, আছি, থাকব। আপনাদের কেউ দেশ থেকে তুলতে পারবে না। একজন বৈধ ভোটারের নাম বাদ দিতে পারবে না। আমি পাহারাদার, জমিদার না। জমিদার দিল্লিতে বসে আছে।”
তৃণমূলের পাশাপাশি সিপিএমও মতুয়াদের পাশে থাকার দাবি তুলেছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী সরাসরি বলেছেন, “শুধু ২০০২ নয়—২০১৯, ২০২১ এবং ২০২৪ সালের ভোটার তালিকাও যুক্ত করতে হবে। যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের নাম বাদ যাবে কেন?”
এসআইআর, মতুয়া কার্ড, রাজনৈতিক শিবিরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ—সব মিলিয়ে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন বনগাঁ-ঠাকুরনগর। মতুয়া ভোটকে কেন্দ্র করে রাজনীতির এই দাবা-কোর্ট এখন আরও তীব্র হওয়ারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।













