ভোটের বাজার গরম হওয়ার আগেই বাংলায় এসে সুর বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অগস্টের সেই সফরের পর থেকেই পর্দার আড়ালে ঘোরাফেরা করছিল তাঁর দেওয়া রাজনৈতিক বার্তা—তৃণমূলকে সরাতেই হবে, তবেই বাংলা ফিরে পাবে তার পুরোনো গৌরব (Mamata Banerjee)। একের পর এক প্রকল্পের উদ্বোধনের পর মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই।’ এরপর থেকে সেই স্লোগানই যেন অমোঘ মন্ত্র হয়ে ঘুরছে বিজেপি শিবিরে (Mamata Banerjee)। পরিবর্তন সংকল্প যাত্রার মিছিলেও সুকান্ত মজুমদাররা সেই একই সুরে গলা মেলাচ্ছেন।
এই স্লোগানযুদ্ধেই এবার সরাসরি নেমে পড়লেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার মতুয়াগড়ে দাঁড়িয়ে তিনি কার্যত রুখে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন। তাঁর কথায়, বাংলাকে আঘাত করলে বাংলাই প্রত্যাঘাত দেবে। বিজেপির উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি—বাংলা দখলের চেষ্টা করলে গুজরাতও হারাবে, দেশও হারাবে।
বক্তৃতা যত এগিয়েছে, ততই ধার বেড়েছে তাঁর আক্রমণে (Mamata Banerjee)। আর বক্তৃতার শেষ লগ্নে মমতা উচ্চারণ করলেন নতুন স্লোগান, যা মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক অন্দরে। তিনি বলেন, “সারা দেশটাকে দখল করে বসেছ। এবার বাংলাটাকেও দখল করতে চাও? কারণ এই বাংলার মাটিই তোমাদের চিনে। তাই শুনে রাখো—চলবে না অন্যায়, টিকবে না ফন্দি, জনগণের আদালতে হতে হবে বন্দি।”
অন্যদিকে বিজেপির পুরোনো প্রতিশ্রুতির খতিয়ানও টেনে আনলেন তিনি। ২০২১-এ অমিত শাহের দেওয়া ‘অব কি বার, দু’শো পার’-এর স্লোগান এখনও তৃণমূল শিবিরে খোঁচার বিষয়। তখন দু’শোর মুখ দেখার আগেই বিজেপিকে আটকে যেতে হয়েছিল ডাবল ডিজিটে।
বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে বিজেপি এবার আর সংখ্যা বলতে নারাজ। সুকান্ত মজুমদারের দাবি—“এইবার আমরা শুধু মোদীর কথাই বলছি—বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই।” উলটে কটাক্ষ ছুড়তে ছাড়েননি তৃণমূলের কুণাল ঘোষও। তাঁর খোঁচা—“বাঁচতে চাই বিজেপি চাই বলে যাঁদের ইডি-সিবিআই পেছনে লেগেছিল, তাঁদেরই তো গতবার টেনে নেওয়া হয়েছিল!”
বাংলার রাজনীতি তাই এখন কার্যত স্লোগান বনাম স্লোগান, বার্তা বনাম পাল্টা-বোঝানোর লড়াই। আর সেই দ্বন্দ্ব যত বাড়ছে, ভোটের দামামাও তত জোরালো হয়ে উঠছে।












