দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর ও পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় ফের অসুস্থ হয়ে পড়লেন দুই বিএলও (BLO)। এসআইআর সংক্রান্ত কাজের প্রবল চাপ যে কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে, তার আরও একটি স্পষ্ট উদাহরণ দেখা গেল শনিবার রাতে। প্রশাসন বলছে, কোনও বাড়তি চাপ দেওয়া হয়নি। কিন্তু পরিবারগুলির দাবি ঠিক উলটো—“দিনের পর দিন মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ভেঙে পড়ছেন বিএলও-রা (BLO)।”
বারুইপুর ব্লকের সূর্যপুরের ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা সবচেয়ে বেশি। রাজপুর–সোনারপুর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ১০৯ নম্বর বুথের বিএলও তনুশ্রী হালদার নাইয়া শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত এসআইআরের কাজ করছিলেন (BLO)। তিনি পেশায় শিক্ষক—নাচন গাজা প্রাইমারি স্কুলে পড়ান। পরিবারের দাবি, গত কয়েকদিন ধরেই নিদেনপক্ষে রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছিল তাঁকে। সেই চাপে হঠাৎই অজ্ঞান হয়ে পড়েন তনুশ্রী (BLO)। তড়িঘড়ি তাঁকে সুভাষগ্রামের সোনারপুর ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঝরাতে ফের অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তর করা হয় বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে। স্বামী অভিযোগ করেছেন—“এসআইআরের সময়সীমা আর চাপ এমনই যে ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিল। সেই দুশ্চিন্তাই শরীরে ছাপ ফেলেছে।”
অন্যদিকে কাটোয়ার ১৪৭ নম্বর বুথের বিএলও শুকদেব দাসও এদিন সকালে এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে বাড়ি বেরোতেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন (BLO)। বুকে তীব্র ব্যথা শুরু হলে দ্রুত তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকের মতে, তাঁর প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে। পরিবারের বক্তব্য আরও স্পষ্ট—“কয়েকদিন ধরেই ঘুমোতে পারছিলেন না। সবসময় ভয় আর দুশ্চিন্তায় থাকতেন। কাজের চাপই এই অবস্থার জন্য দায়ী।”
তবে প্রশাসনের বক্তব্য ভিন্ন। কাটোয়ার মহকুমা শাসকের দাবি, কোনও ব্যক্তিগত বা অতিরিক্ত চাপ দেওয়া হয়নি। কমিশনের নির্দেশ মতোই কাজ করতে বলা হয়েছে। অসুস্থ বিএলওদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। কিন্তু ভোটকর্মীদের পরিবার ও সহকর্মীদের কথা বলছে ভিন্ন সুরেই—“কমিশনের ডেডলাইন, রিপোর্ট, অ্যাপ আপলোড—সব কিছু নিয়ে দিনরাত চাপ। এর দায় কে নেবে?”
এসআইআর সংক্রান্ত কাজের জাঁতাকলে পড়ে যেভাবে পরপর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন ভোটকর্মীরা, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে জেলাজুড়ে। প্রশ্ন উঠছে—এই পরিস্থিতিতে কীভাবে নিরাপদে, মানসিক চাপে না পড়ে কাজ করতে পারবেন বিএলওরা?













