রাজ্যে এসআইআর (SIR) শুরু হওয়ার পর থেকেই যেন একের পর এক বিস্ময়কর তথ্য উঠে আসছে। ভিনদেশি নাগরিকের ভোটার কার্ড, ভুয়ো নথিতে নাগরিকত্ব—এসবের পর এবার সামনে এল আরও চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা। আলিপুরদুয়ারের হ্যামিলটনগঞ্জের নেতাজিপল্লিতে দেখা গেল, যাঁদের মা-বাবা বলে দাবি করে একজন ভোটার নথি তৈরি করেছেন, সেই মানুষগুলোই নাকি তাঁকে ‘চিনতেই’ পারেন না (SIR)!
নাম হায়দার শেখ। তাঁর ভোটার কার্ডে বাবা-মায়ের নাম লেখা রয়েছে অনিমা বিবি ও বল্লাল শেখ। একই নাম রয়েছে তাঁর আধার থেকে পাসপোর্ট—সব নথিতেই (SIR)। কিন্তু এসআইআর-এর ফর্ম ফিল আপ করতে গিয়ে অনিমা বিবি আচমকাই জানতে পারেন, তাঁকে কারও মা হিসেবে দেখানো হয়েছে! অনিমার বিস্ময় রাগে-ক্ষোভে পরিণত হয়। চার বছর আগে মারা গিয়েছেন তাঁর স্বামী বল্লাল শেখ। আর হায়দার তাঁদের কেউ নন—এই দাবি জানিয়ে তিনি সরাসরি কালচিনির বিডিওর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দেন (SIR)।
অনিমা জানান, পরিবারের অজান্তে তাঁদের নাম ব্যবহার করে কেউ পরিচয় তৈরি করলে ভবিষ্যতে মারাত্মক সমস্যা তৈরি হতে পারে বলেই তিনি প্রশাসনের শরণাপন্ন হয়েছেন। তাঁর কথায়, “ছেলেই নয়, অথচ নথিতে আমাদেরই নাম! এটা কী করে হল?”
অন্যদিকে হায়দার শেখ দাবি তুলেছেন ঠিক উল্টো। তাঁর বক্তব্য, তিনি নাকি অনিমা ও বল্লালের পালিত ছেলে। জ্যাঠামশাই-জ্যেঠিমা হিসেবেই তাঁদের পরিচয় দিতেন বরাবর। এখন স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বলে নাকি অনিমা তাঁকে অস্বীকার করছেন। হায়দারের কথায়, “আমি জন্মের পর থেকেই এখানে আছি। তাঁরা আমাকে লালন করেছেন।”
নেতাজিপল্লির পঞ্চায়েত সদস্য উজ্জ্বল শর্মা জানান, বিষয়টি শুক্রবার তাঁদের নজরে এসেছে। হায়দার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য কি ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিবেশীকে মা-বাবা সাজিয়েছেন? নাকি পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? এলাকায় ইতিমধ্যেই উঠেছে অনুপ্রবেশের প্রশ্ন। প্রশাসন এই অদ্ভুত ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করবে বলে জানিয়েছেন উজ্জ্বলবাবু।
এসআইআর-এর সময়ে এসব তথ্য সামনে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এখন প্রশ্ন একটাই—এতদিন ধরে ভুয়ো পরিচয়ে কীভাবে সব সরকারি নথি তৈরি হলো? এর পিছনে কি আরও বড় কোনও চক্র লুকিয়ে আছে?













