পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সোমবার দুপুর বারোটায় অনশন ভেঙে দেওয়ার কথা ছিল তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের (Mamata bala thakur)। কিন্তু নির্ধারিত সময় এলেও তিনি মঞ্চ ছাড়েননি। অপেক্ষা করছিলেন মতুয়া ভক্তদের আরও বড় জমায়েতের জন্য। আর ঠিক এই অপেক্ষার মাঝেই ঘটে গেল নাটকীয় মোড়। দীর্ঘ অনশনের ধকল আর সহ্য করতে পারেননি তিনি। আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন মমতাবালা। তৎক্ষণাৎ তাঁকে ঠাকুরনগর হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগেই তিনি অনশন প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন (Mamata bala thakur)।
বাংলার ভোটার তালিকা সংশোধনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত কয়েকদিন ধরে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন মমতাবালা (Mamata bala thakur)। তাঁর সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন বহু মতুয়া ভক্ত। ইতিমধ্যে এই অনশনের প্রভাবে একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আন্দোলনকারীদের বেশ কয়েকজন। কিন্তু মমতাবালার অনড় অবস্থান টলাতে পারেনি কেউ। অবশেষে অনশনের শেষ দিনেই তিনি নিজেই শারীরিকভাবে ভেঙে পড়লেন।
এই আন্দোলনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল—এটি কোনও দলের দেওয়ালের মধ্যে আটকে থাকেনি (Mamata bala thakur)। অনশন মঞ্চে একদিকে যেমন হাজির হয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী, যিনি বসেই তৃণমূল ও বিজেপিকে একহাত নেন, তেমনই উপস্থিত হন বামের প্রবীণ নেতা সুজন চক্রবর্তী। পরে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলও সেখানে যোগ দেয় এবং পরিস্থিতি নিজেরাই নরম করে।
রবিবার তৃণমূলের প্রতিনিধি দল মঞ্চে যাওয়ার পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে কথা বলেন মমতাবালার সঙ্গে। অনশনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেও তিনি অনুরোধ জানান দ্রুত অনশন প্রত্যাহারের। একটি চিঠিও পাঠান তাঁর পক্ষ থেকে, যা মমতাবালা পান এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু সোমবার দুপুরে ঘোষণার আগেই ঘটে অপ্রত্যাশিত ঘটনা। টানা অনশনের ক্লান্তিতে উদ্বেগজনক অবস্থায় পড়ে যান মমতাবালা। আন্দোলনকারীদের একজন জানান, বনগাঁ ও চাঁদপাড়া হাসপাতালের সুপারদের খবর দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা এসে মমতাবালার পরিস্থিতি দেখে জানান, তাঁকে দ্রুত ক্রিটিক্যাল কেয়ারে রাখতে হতে পারে। আপাতত ঠাকুরনগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে, এরপর বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
এদিকে মতুয়া মহলে অনশন ভাঙা ও মমতাবালার অসুস্থতা—দুটি নিয়েই উদ্বেগ ও আবেগ মিশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে বিতর্ক—এই অনশন কার লাভ করল, কার ক্ষতি? আর কেনই বা এত দেরি করে অনশন প্রত্যাহার?













