নয়ডার সেক্টর ১০৮-এর ড্রেনে মাথাবিহীন দেহ উদ্ধার (Noida Murder) হওয়ার পর এক সপ্তাহ ধরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল পুরো এলাকা জুড়ে। হাত দু’টিও কাটা, মুখ চেনার উপায় নেই—পুলিশের কাজ প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। কিন্তু অবশেষে সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। ধরা পড়েছে খোদ প্রেমিক মনু সোলাঙ্কি, পেশায় বাসচালক (Noida Murder)। স্বীকারোক্তিতে তিনি জানিয়েছেন এমন এক কাহিনি, যা শোনার পর শিউরে উঠেছে তদন্তকারীরা।
গত ৬ নভেম্বর নয়ডা সেক্টর ১০৮-এর এক ড্রেনে উদ্ধার হয় এক তরুণীর দেহ (Noida Murder)। পরে জানা যায়, মৃতা প্রীতি যাদব, যিনি পাঁচ–ছয় দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তদন্তে নামতেই পুলিশ গড়ে তোলে একাধিক টিম। চষে ফেলা হয় ৫,০০০-এর বেশি সিসিটিভি ফুটেজ, খতিয়ে দেখা হয় প্রায় ১,০০০ যান, ৪৪ জন সন্দেহভাজন চালককে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। তবুও দোষী মিলছিল না (Noida Murder)।
এর মধ্যেই নজরে আসে একটি সাদা–নীল বাস—নম্বর UP16KT0037। বাসটি অপরাধস্থলের দিকে যাচ্ছিল খুনের রাতেই (Noida Murder)। চালকের নাম মনু সোলাঙ্কি, বাড়ি বারৌলা। একই সময় পুলিশ প্রীতি যাদবের নিখোঁজ থাকার তথ্য পেতে শুরু করে। এভাবেই জোড়া লাগতে থাকে পাজল।
১৪ নভেম্বর মনুকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেরায় মনু যা বলেন, তা আরও ভয়াবহ (Noida Murder)। মনু জানিয়েছেন, প্রীতি তাঁর মায়ের সঙ্গে একটি জিন্স কারখানায় কাজ করতেন। সেখান থেকেই সম্পর্কের সূত্রপাত। ধীরে ধীরে দু’জনই পরস্পরের কাছাকাছি চলে আসেন। কিন্তু সময় গিয়ে বদলায় সমীকরণ। মনুর দাবি, প্রীতি নিয়মিত তাঁর কাছ থেকে টাকা চাইতেন এবং তাঁর উপার্জনের বড় অংশই নিয়ে নিতেন। আপত্তি জানালে হুমকি দিতেন তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের কাছে সম্পর্ক ফাঁস করে দেওয়ার। এমনকি মনুর ছেলেকে বেআইনি কাজে জড়ানোর ভয়ও দেখাতেন বলে দাবি ধৃতের।
নিরন্তর চাপ, ব্ল্যাকমেল ও ভয় দেখানোয় মানসিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েন মনু। পরিকল্পনা করেন প্রীতিকে সরানোর। ৫ নভেম্বর মনু তাঁর বাস নিয়ে পৌঁছন প্রীতির বাড়ি। তাঁকে বাসে তুলে নিয়ে যান। পথেই তাঁরা একটি দোকানে থেমে পরোটা আর ম্যাগি খান। সেখানেই তর্ক বাড়তে থাকে। তারপর, মনুর কথায়—রাগের মাথায় তিনি ধারাল অস্ত্র দিয়ে প্রীতিকে কোপাতে শুরু করেন। মাথা আলাদা করে ফেলেন, হাত দু’টিও কেটে দেন যাতে দেহ শনাক্ত করা না যায়।
এরপর দেহ ফেলে দেওয়া হয় নয়ডার ড্রেনে। মাথা ও হাত নিয়ে মনু চলে যান গাজিয়াবাদ। সেখানে নিজের বাসের চাকা দিয়ে পিষে বিকৃত করে ফেলে দেন ওই অংশগুলি।
পুলিশ বাসটি বাজেয়াপ্ত করেছে। রক্তমাখা ম্যাট উদ্ধার হয়েছে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে গোটা এলাকায় শোক ও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।











