বিহারের ভোটের ফল বেরোতেই বড় ধাক্কা খেলেন ভোটকুশলি হিসাবে পরিচিত প্রশান্ত কিশোর (Bihar Election)। রাজনীতিতে নামার সময় তিনি যেমন ধুমধাম করে ঘোষণা করেছিলেন “নতুন ভোরের” স্বপ্ন, ফল বেরোতেই তার সবটাই যেন এক লহমায় ভেঙে পড়ল। তাঁর জন সুরাজ পার্টি একটি আসনও জিততে পারেনি। নিজেও ফল প্রকাশের পর হতাশা লুকাননি পিকে। আর এবার দলের সভাপতি উদয় সিংও স্বীকার করে নিলেন কঠিন বাস্তব (Bihar Election)।
উদয় সিং সরাসরি বলেন, জন সুরাজ পার্টির কাছে এই ফল হতাশার (Bihar Election), কিন্তু তা তাঁদের পথ চলা থামিয়ে দিতে পারবে না। তাঁর কথায়, “আমরা একটিও আসন জিততে পারিনি, এটা স্বীকার করছি। কিন্তু আমরা বিচলিত নই। এনডিএ-র বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েই যাব। এই ফল স্পষ্ট করে দিয়েছে— বিহারের জনগণ আরজেডির প্রত্যাবর্তন চায় না।”
তিনি (Bihar Election) আরও বলেন, দল মুসলিম ভোট টানতে ব্যর্থ হয়েছে। দীর্ঘদিনের জাতপাতের সমীকরণে বাঁধা বিহারে পিকে–র দল নিজেদের ‘তৃতীয় বিকল্প’ হিসেবে তুলে ধরতে চাইলেও ভোটারদের আস্থায় তা ধরা পড়েনি। বরং অন্য দিকে আরও শক্তিশালী প্রভাব ফেলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে চালু হওয়া ‘মুখ্যমন্ত্রী মহিলা রোজগার যোজনা’। উদয় সিংয়ের স্বীকারোক্তি, এই প্রকল্পই ভোটে বড় প্রভাব ফেলেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই প্রকল্পে বিহারের ৭৫ লক্ষ মহিলাকে ব্যবসা বা চাষবাস শুরু করার জন্য ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে (Bihar Election)। কোনও মহিলা যদি সফলভাবে নিজের ব্যবসা চালাতে পারেন, তবে ভবিষ্যতে তাঁকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেয় রাজ্য সরকার। এই প্রকল্প গ্রামাঞ্চলের মহিলাদের মধ্যে বিশাল সাড়া জাগিয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জন সুরাজ পার্টির উত্থান খুব বেশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং মিডিয়া প্রচারে সীমাবদ্ধ ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় পিকে–র উপস্থিতি, মাঝেমধ্যে উচ্চস্বরে দেওয়া সাক্ষাৎকার—সবটাই আলোচনার ঝড় তুলেছিল বটে, কিন্তু গ্রাম-গঞ্জের রাজনৈতিক বাস্তবতা যে অনেক গভীর এবং কঠিন, তা এবার প্রমাণ হয়ে গেল। কৌশলবিদ হিসাবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি থাকলেও, মাঠের রাজনীতির লড়াই যে সম্পূর্ণ আলাদা, তা হয়তো এবার ভালভাবেই উপলব্ধি করলেন প্রশান্ত কিশোর।











