বিহারের নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই বাংলার রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন উঠেছে। ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের (Humayun Kabir) বক্তব্য সেই আলোড়ন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাঁর দাবি, বাংলার মুসলিম সমাজের মধ্যে অসন্তোষ দ্রুত বাড়ছে এবং শাসকদল সতর্ক না হলে বিহারের মতো তার প্রতিক্রিয়া বাংলার ভোটেও পড়তে পারে। তাঁর কথায়, “গোটা সম্প্রদায়কে যদি দীর্ঘদিন অবহেলা করা হয়, তাচ্ছিল্য করা হয়, তাহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতেই পারে। সেটা বিহারের ফলাফলে পরিষ্কার। মুসলিমরা ওখানে মত পরিবর্তন করেছে (Humayun Kabir)। বাংলাতেও তার আঁচ পড়বে—এটা বলাই বাহুল্য।”
তবে হুমায়ুন (Humayun Kabir) মনে করেন, মিম বাংলায় তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারবে না। কিন্তু ব্যর্থতার দায় তিনি টেনে এনেছেন প্রশান্ত কিশোরকে। সরাসরি নাম না করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক কৌশল দেখানোর জন্য যে বুদ্ধি আইপ্যাকের টেবিলে বসে কাগজে-কলমে তৈরি হয়, তা বাস্তবে মানুষের মন জয় করতে পারে না। বিহারে পিকে-র নিজস্ব দল গড়ে লড়াই করে ব্যর্থতার প্রসঙ্গ টেনে হুমায়ুন (Humayun Kabir) বলেন, “প্রশান্ত কিশোর নিজের দল নিয়ে বিহারে লড়লেও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাননি। তাঁর সেই আইকিউ বাস্তব রাজনীতিতে কাজে লাগেনি। তাহলে বাংলায় তিনি কী করে এত গ্রহণযোগ্যতা দাবি করেন?”
এই মন্তব্য নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ অবশ্য হুমায়ুনের বক্তব্য সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “উনি যত মানুষের সঙ্গে থাকেন তার থেকেও অনেক বেশি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। তাই কোনওভাবেই বিহারের মতো বাংলার অবস্থা হওয়ার প্রশ্নই নেই।”
কিন্তু তাতে থামেননি হুমায়ুন। তাঁর দাবি, শাসকদলের শীর্ষনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই এখন সমস্ত দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেওয়া জরুরি। তিনি আরও বলেন, “বাংলায় মমতার জয়ের জন্য প্রশান্ত কিশোর ক্রেডিট নিয়েছিলেন। সত্যিটা হল—ওই জয়ে তাঁর কোনও কৃতিত্বই নেই। সেই জয় পুরোপুরি মমতারই।”
এই মন্তব্যে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে—মুসলিম ভোটের মনোভাব কি সত্যিই বদলাচ্ছে? বিহারের ফল কি বাংলার রাজনৈতিক স্রোতেও প্রভাব ফেলতে পারে? তৃণমূলের অন্দরের এই তীব্র বিরোধ ভবিষ্যতে আরও কোন মোড় নেবে, তা এখন রাজনৈতিক মহল গভীর আগ্রহ নিয়ে দেখছে।













